"রক্তেভেজা একাত্তর" বইয়ের ভূমিকার অংশ থেকে নেয়া: লেখকের কথা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা। জনতার একজন হয়ে জনযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান। মনে করি। বিভিন্ন রণাঙ্গনে বাঙালি সৈনিক, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিকের শৌর্যবীর্য ও দেশাত্মবােধ প্রত্যক্ষ করে অপার বিস্ময়ে আনন্দে অভিভূত হয়েছি। এ বইতে বর্ণিত প্রতিটি ঘটনা সত্যি, এতে কোনাে প্রকার রঙ চড়ানাে হয় নি, নিজেকে জাহির করার চেষ্টাও করি নি। স্বাধীন বাংলাদেশে সাধারণ সৈনিক, পল্লী অঞ্চলের মুক্তিযােদ্ধা ছাত্র-যুবকদের সঠিক মূল্যায়ন আজো হয় নি। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর আমরা জয়ী হয়েছিলাম, পরদিন থেকে পরাজয়ের পালা শুরু হলাে। '৯৬ সালে স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী উৎসব। পালনকালে দেশের বীর সন্তানদের গৌরবগাথা লিপিবদ্ধ করার তাগিদ অনুভব করি । দৈনিক ভােরের কাগজ’-এ আমার লেখা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে। পত্রিকার সম্পাদক জনাব মতিউর রহমান এবং রিপাের্টার পুষ্করের ক্রমাগত তাগাদার ফলেই আমার পক্ষে বই লেখা সম্ভব হয়েছে, তাদেরকে ধন্যবাদ। প্রকাশক মফিদুল হক বইটি ছেপে আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।
হাফিজ উদ্দিন আহমদ ১৯৪৪ সালের ২৯ অক্টোবর ভােলার লালমােহনে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ-র পাঠ শেষে যােগ দেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে। ১৯৬৮ সালে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্ব প্রদর্শনের জন্য সরকার কর্তৃক বীরবিক্রম’ উপাধিতে ভূষিত হন। পাকিস্তান জাতীয় ফুটবল দলের খেলােয়াড় হিসেবে বিভিন্ন দেশ সফর করেন। বিভিন্ন প্রতিযােগিতায় ঢাকা মােহামেডান স্পাের্টিং ক্লাব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় দলের অধিনায়কত্ব করেন। ১৯৮০ সালে জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের নির্বাচিত সহ-সভাপতি ছিলেন। ফিফা’র আপিল ও ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি রাজনীতিতে বিশেষ সক্রিয় রয়েছেন, ভােলা-৩ আসন থেকে ছয়বার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এক সময় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দু’পুত্র শাহরুখ হাফিজ ও তাহারাত হাফিজ এবং কন্যা শামামা শাহরীনের জনক। স্ত্রী দিলারা হাফিজ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক।