ছোটোবেলা থেকে রাজনীতিকেই করে নিয়েছি জীবনের পথ। জনগণের এবং দলের জন্য নিজেকে নিবেদন করে বয়সের দিকে, শরীরের দিকে তাকানোর সময় পাইনি। হঠাৎ শরীর বেঁকে বসলো। ডাক্তার দেখালাম। তাদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য আমেরিকা গেলাম। দেশে আর বেঁচে ফিরে যেতে পারবো কি না, এই সন্দেহ মনে দেখা দিল। কিন্তু আল্লাহ তাআলার অশেষ রহমতে আর ডাক্তারদের চেষ্টায় সুস্থ হলাম। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম দেশে ফিরে সত্যের রাজনীতি করবো। কিন্তু সত্য যে কঠিন, সেটা তখনও উপলব্ধি করতে পারিনি। ধীরে ধীরে খেয়াল করলাম, আমার হাতে গড়া কর্মীদের একটা অংশ রাজনীতির মাঠে অপশক্তির সাথে হাত মিলিয়েছে। এরই মধ্যে ঘটলো ৯-ই মার্চের কাল রাত্রির ঘটনা। সত্যের পক্ষে অবস্থান আমার জীবনকে সংকটে ফেলে দিল। জীবনকে নতুন করে বুঝতে শুরু করলাম। মনে হল, আমার কথাগুলি মানুষকে বলা দরকার। যে আদর্শ, যে চিন্তা, যে চেতনা ধারণ করে জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য এক জীবন সংগ্রাম করে গেলাম সে সংগ্রাম ও ত্যাগ-তিতিক্ষার গল্প মানুষকে জানানোর প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে কলম ধরলাম। আমি একজন সাধারণ শিক্ষকের সন্তান। জীবনের গৌরব বলতে বেশি কিছু নেই। এক জীবন কোম্পানীগঞ্জের মানুষের পাশে থেকে কাটিয়েছি। বিনিময়ে পেয়েছি অফুরন্ত ভালোবাসা। কিছু তিক্ততা, ব্যক্তিগত দুঃখ-বেদনাও আছে, আছে রাজনৈতিক সংগ্রামের নানা পর্ব। এইসব মিলিয়েই আমার জীবন পরিক্রমা ‘সত্য যে কঠিন’। আত্মজীবনী লেখা সত্যি কঠিন ব্যাপার। তথ্য ও উপাত্ত শতভাগ নিখুঁতভাবে উপস্থাপন করা কষ্টসাধ্য। সব কথা, সব ব্যথা, সব তথ্য মনে নেই। স্মৃতিতে সব নেই। বয়সের কারণে অনেক কথাই ভুলে গেছি। যেটুকু মনে পড়েছে তা-ই লেখার চেষ্টা করেছি।