ঈমান ও সংশয় দুটি বিপরীতমুখী বিষয়। ঈমান মানুষকে ঋদ্ধ করে। সমৃদ্ধ করে। স্রষ্টার পরিচয় ও তুষ্টি লাভের তৃষ্ণা জাগিয়ে তোলে। আপন মালিক ও খালিকের প্রতি অনুগত হওয়ার কামনা তৈরি করে। আপন রবের ভয় ও সন্তুষ্টির গুরুত্ব জাগিয়ে তোলে। , ক্ষুদ্র ও সীমিত পার্থিব জীবনটাকে রবের বিধি মোতাবেক পরিচালনা করে পরকালীন নিরাপত্তা ও শান্তির জীবন গঠনের প্রেরণা জাগায়। আর সংশয়! সংশয় মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়। পরিচয়হীন জীবনের দিকে ঠেলে দেয়। ঈমানের নুর ও শক্তির পাশাপাশি নিজের আত্মশক্তি ও বিবেচনাবোধ কেড়ে নেয়। ধর্মবিমুখ পশ্চিমা শিক্ষাব্যবস্থার অপপ্রয়োগ আমাদের মাঝে এই সংশয়ের ব্যাধি সৃষ্টি করে যাচ্ছে। চিন্তা ও মতের স্বাধীনতার মিথ্যা ফাঁদে ফেলে শুধু ঈমান নয়, কেড়ে নিচ্ছে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজ-জীবনের গভীর বোধটুকুও। বলা হচ্ছে বিজ্ঞান শেখো। বিজ্ঞানসম্মত হও। দেখবে ধর্ম এক নেশা! আল্লাহ তথা স্রষ্টা বলে কিছু নেই। অথচ পশ্চিমাদের এত সাধের বিজ্ঞানই স্রষ্টার অস্তিত্বকে জানান দেয় বারবার। আল্লাহর দেয়া বিধানের যৌক্তিকতা প্রমাণ হয় বিজ্ঞানের নিজস্ব সূত্রেই। ইসলামের মাহাত্ম্য ধরা দেয় ল্যাবের সমীকরণে। তবে তা বোঝার জন্য চাই উপযুক্ত বোধ। সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি। আর তীব্র আকাঙ্ক্ষা। গত শতকের প্রখ্যাত মিসরীয় বুদ্ধিজীবী ড. মুসতাফা মাহমুদ ছিলেন এমনই একজন সত্যান্বেষী ব্যক্তিত্ব। পশ্চিমাদের উপস্থাপনা শুরু যৌবনে যার মাঝে সংশয়ের ব্যাধি গেড়ে দিয়েছিল। একনিষ্ঠ চিত্তে সঠিক, সত্য ও বাস্তবতার অনুসন্ধান যাকে ফিরিয়ে দিয়েছে ‘আলোর পথ’। তুলে এনেছে হিদায়াতের রাজপথে। সংশয় হতে ঈমানের পথে সে যাত্রাকে তিনি মলাটবদ্ধ করেছেন ‘রিহলাতি ইলাল ঈমান’ গ্রন্থে। বিদগ্ধ লেখক ও প্রাজ্ঞ অনুবাদক শাহেদ হারুনের কলমে তা অনূদিত হয়েছে ‘যেভাবে আস্তিক হলাম’ শিরোনামে। বইটি সংশয় ধোঁয়াশায় পথ হারানো ভাই ও বন্ধুদের পথে মেলে ধরবে আলোর মশাল। ঈমানদার পাঠককে ঋদ্ধ করবে এই বিষয়ক জ্ঞানের আলোকচ্ছটায়।