"তোরসা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: স্বাধীন দেশের মাটিতে কতগুলো সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে তার হিসেব আছে। কিন্তু অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগ বা সন্দেহে কজন সেনা-সদস্য আজঅব্দি হারিয়ে গেছেন আর তার পেছনে ফেলে যাওয়া পরিবারের মানুষগুলি কতটা এবং কিভাবে বেঁচে আছে, তার কোনো খতিয়ান কি আছে? ক্যু সফল হলে তার সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই জাতীয় বীর, প্রাতঃস্মরণীয়! কিন্তু, ক্যু অসফল হলে? আজন্ম গুমটি ঘরে বেড়ে ওঠা রক্ষণশীল ঘরের মেয়েটাকে সেনাবাহিনীর কৃতি সদস্য হবার চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলে, কতটুকু অনতিক্রম্য, বন্ধুর হতে পারে তার এই লক্ষ্যভেদ? গভীর রাতে ডাস্টবিন থেকে ভেসে আসা নবজাতকের কান্না “আমরা আসলেই কতটা মানবিক”-এ প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করায়। ডাস্টবিন কুকুর-ইঁদুরের আহার না হয়ে, প্রখর রোদ আর ততোধিক পাষণ্ড মানুষের দ্বিধার আগুনে পুড়ে এমন অনাকাঙ্ক্ষিত শিশু যদি বেঁচেও যায়, কেমন হয় তার বেড়ে ওঠা? এমন অভ্যর্থনার পর জীবনের কাছে তার আর কি চাওয়ার থাকতে পারে? মেধাবী শিক্ষার্থীরাই সচরচর বামপন্থি রাজনীতিতে জড়িয়েছে যুগে যুগে সব দেশেই। সমাজতন্ত্রের এই ধারার কোনোটা রাজনৈতিক মোড়ক পেয়েছে- কোনোটা পায়নি। না পেলেই তকমা জুটেছে Under Ground Politics, আদর্শের ধরন-প্রয়োগ যেমনি হোক। জীবনের গ্যারান্টি নেই, গুম হত্যারও শাস্তি নেই। সব হারাতেই যেন তাদের সর্বহারা হতে পথে নামা, সবহারাদের এক কাতারে আনতে নয়। তাই কালান্তরে হারিয়ে গেছে কত শত মেধাবী মুখ- সবহারারা রয়ে গেছে তেমনই। প্রতিটি সম্পর্ককে সুনিপুণ বুননের মুনশিআনায় কি করে নিখুঁত এক প্রেমময় নকশি কাঁথার জন্ম দেন- স্রষ্টার এই অপার রহস্য কেবল তিনিই জানেন।