বিংশ শতাব্দীর আলোড়ন সৃষ্টিকারী মুজাদ্দিদ উস্তাদ বদিউজ্জামান সাঈদ নুরসী উম্মতে মুসলিমার এমনি এক যুগশ্রেষ্ঠ আলেমেদ্বীন ও কালজয়ী মহান সংস্কারক ছিলেন। যিনি আল্লাহ প্রদত্ত সুগভীর জ্ঞান ও হিকমতের আলোকে কেয়ামতের আলামত সম্পর্কিত সেই হিকমত ও গভীর তাৎপর্যপূর্ণ হাদীস ও তার বাস্তবতা যুক্তিগ্রাহ্য মানদণ্ডের আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর এই গবেষণালব্ধ মূল্যবান রচনাটি সময়ের প্রয়োজনে বিশ্বের প্রায় ষাটেরও অধিক ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তাই বাংলা ভাষায় এই অসাধারণ গ্রন্থটি অনুবাদ করতে পেরে আমরা গর্বিত। বদিউজ্জামান সাঈদ নুরসী (রাহঃ) উম্মতে মুহাম্মদীর এমন এক বিরল কালজয়ী প্রতিভা, যিনি বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি ও বাস্তবতাকে সামনে রেখে কেয়ামতের আলামত সম্পর্কিত তাৎপর্যপূর্ণ হাদীস সমূহের অত্যান্ত বাস্তবধর্মী ও দূরদর্শী ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ের বন্ধ দুয়ার খুলে দিয়েছেন। কেয়ামত যে সুদূর পরাহত কোন বিষয় নয় বরং নিকট ভবিষ্যতের কঠিন বাস্তবতা, তাই তিনি বর্তমান পরিবর্তনশীল বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে তাৎপর্যপূর্ণ বিশ্লেষণ ও বাস্তবধর্মী আলোচনার মাধ্যমে অত্যান্ত যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতিতে উপস্থাপন করেছেন। আর কেয়ামত সম্পর্কিত সাঈদ নুরসী (রাহঃ)-এর এই বিশ্লেষণ তার কোন ধারণা প্রসূত গবেষণার ফলাফল নয় বরং এতদসংক্রান্ত পবিত্র কোরআন ও হাদীস সমূহের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেই মূলতঃ তিনি এই অদূরবর্তী বাস্তবতার প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন তাঁর কেয়ামতের আলামত ও তার বাস্তবতা’ নামক এই গ্রন্থে।
সাইদ নুরসি (১৮৭৬ – ১৯৬০), বদিউজ্জামান নামেও পরিচিত ছিলেন। তিনি একজন সুন্নি মুসলিম ধর্মতাত্ত্বিক। তিনি রিসালায়ে নূর নামক কুরআনের ব্যাখ্যা রচনা করেন। এটির আকার ছয় হাজার পৃষ্ঠার অধিক। আধুনিক বিজ্ঞান ও যুক্তিকে ভবিষ্যতের পথ বিবেচনা করে তিনি সাধারণ বিদ্যালয়ে ধর্মীয় জ্ঞান ও ধর্মীয় বিদ্যালয়ে আধুনিক বিজ্ঞান শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন।নুরসি একটি বিশ্বাসভিত্তিক আন্দোলনের সূত্রপাত করেন। এই আন্দোলন তুরস্কে ইসলামের পুনর্জাগরণে ভূমিকা রাখে। বর্তমানে সারাবিশ্বে এর ব্যাপক অনুসারী রয়েছে। তার অনুসারীদের প্রায় "নুরজু" বা "নুর জামাত" নামে অবিহিত করা হয় এবং তাকে শ্রদ্ধা করে উস্তাদ ডাকা হয়।অনুরক্ত তুর্কি যুবসমাজ তাকে বদিউজ্জামান বা যুগের বিশ্বয় (Wonder of the age) নামে অভিহিত করে।