অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুস সাত্তার বাংলাদেশের একজন প্রবীণ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী। ১৩৩৫ বাংলা সনের ৬ জ্যৈষ্ঠ, (২০ মে ১৯২৮ সাল) তিনি শেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৬ সালে শেরপুর জি কে পি এম স্কুল থেকে মেট্রিক, ১৯৪৯ সালে বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৫১ সালে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কলেজে পড়ার সময় কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ১৯৪৮ সালে শেরপুরে তিনি প্রথম কারাবরণ করেন। ১৯৫০ সনে তিনি জামালপুরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ঐ বছরেই তিনি ঢাকায় যুবলীগ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং যুব লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সনে তিনি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ঐ বছরেই তিনি ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এমএ পাশ করেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনকালে সর্বদলীয় কর্মীশিবিরের জামালপুর শাখার সম্পাদক নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর তিনি ভূয়াপুর কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ঐ বছরেই তাঁর উপর হুলিয়া আরোপিত হলে তিনি আত্মগোপন করেন। এই সময়েই পলাতক অবস্থায় তিনি বিয়ে করেন। ১৯৫৫ সনের শেষ দিকে তাঁর উপর থেকে হুলিয়া প্রত্যাহার করার সাথে সাথেই তিনি আবার কলেজের চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৫৬ সনে তিনি কাগমারী সম্মেলনের অন্যতম সংগঠকরূপে কাজ করেন। ১৯৫৭ সনে চাঁদপুর কলেজে যোগদান করেন। ১৯৫৮ সনে তিনি চাঁদপুরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন এবং চাঁদপুর সংগীত নিকেতনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৬৬ সনে চাঁদপুরে শিশুকিশোর সংগঠন কচি কাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৭ সনে তিনি মোজাফফর ন্যাপে যোগ দেন। ১৯৭০ সনের নির্বাচনে তিনি ন্যাপের প্রার্থী হিসাবে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হওয়ার সাথে সাথেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান করেন এবং চাঁদপুরের ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্মীদের মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়ে দিয়ে তিনি পরিবারসহ ভূয়াপুরে চলে আসেন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি পুনরায় চাঁদপুর কলেজে যোগ দেন এবং চাঁদপুর জেলা ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সনে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তিনি ন্যাপের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন। এই সময়ে তিনি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সনে চাঁদপুর খেলাঘর আসরের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৮২ সনে তিনি চাঁদপুর থেকে জামালপুর সরকারি জাহেদা শফির মহিলা কলেজে বদলি হয়ে যান। ১৯৮৯ সনে তিনি শেরপুর সরকারী কলেজ থেকে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি পুনরায় সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯০ সনে জামালপুরের উল্লেখযোগ্য মুক্তি সংগ্রামীদের পরিচয় দিয়ে পুস্তক প্রকাশ, সংবর্ধনা ও পদক প্রদান করে সম্মানিত করেন। তিনি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জামালপুর জেলা শাখার প্রথম আহবায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সন থেকে ১৯৮৯ সন পর্যন্ত তিনি ৩৫ বছর অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত থেকে শিক্ষকতার পাশাপাশি অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মীও তৈরী করেছেন। তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর উপদেষ্টা মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এবং গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। এই মহান ব্যক্তি ৩ জুন ২০০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুস সাত্তার বাংলাদেশের একজন প্রবীণ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী। ১৩৩৫ বাংলা সনের ৬ জ্যৈষ্ঠ, (২০ মে ১৯২৮ সাল) তিনি শেরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৬ সালে শেরপুর জি কে পি এম স্কুল থেকে মেট্রিক, ১৯৪৯ সালে বগুড়া আজিজুল হক কলেজ থেকে আইএ এবং ১৯৫১ সালে জামালপুর আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কলেজে পড়ার সময় কৃষক আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে ১৯৪৮ সালে শেরপুরে তিনি প্রথম কারাবরণ করেন। ১৯৫০ সনে তিনি জামালপুরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ঐ বছরেই তিনি ঢাকায় যুবলীগ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন এবং যুব লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৫২ সনে তিনি রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন এবং ঐ বছরেই তিনি ছাত্র ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে এমএ পাশ করেন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনকালে সর্বদলীয় কর্মীশিবিরের জামালপুর শাখার সম্পাদক নির্বাচিত হন। নির্বাচনের পর তিনি ভূয়াপুর কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ঐ বছরেই তাঁর উপর হুলিয়া আরোপিত হলে তিনি আত্মগোপন করেন। এই সময়েই পলাতক অবস্থায় তিনি বিয়ে করেন। ১৯৫৫ সনের শেষ দিকে তাঁর উপর থেকে হুলিয়া প্রত্যাহার করার সাথে সাথেই তিনি আবার কলেজের চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৫৬ সনে তিনি কাগমারী সম্মেলনের অন্যতম সংগঠকরূপে কাজ করেন। ১৯৫৭ সনে চাঁদপুর কলেজে যোগদান করেন। ১৯৫৮ সনে তিনি চাঁদপুরে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন এবং চাঁদপুর সংগীত নিকেতনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। ১৯৬৬ সনে চাঁদপুরে শিশুকিশোর সংগঠন কচি কাঁচার মেলা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৭ সনে তিনি মোজাফফর ন্যাপে যোগ দেন। ১৯৭০ সনের নির্বাচনে তিনি ন্যাপের প্রার্থী হিসাবে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হওয়ার সাথে সাথেই তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগদান করেন এবং চাঁদপুরের ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়ন কর্মীদের মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়ে দিয়ে তিনি পরিবারসহ ভূয়াপুরে চলে আসেন ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি পুনরায় চাঁদপুর কলেজে যোগ দেন এবং চাঁদপুর জেলা ন্যাপের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সনে জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে তিনি ন্যাপের প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন। এই সময়ে তিনি উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সনে চাঁদপুর খেলাঘর আসরের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৮২ সনে তিনি চাঁদপুর থেকে জামালপুর সরকারি জাহেদা শফির মহিলা কলেজে বদলি হয়ে যান। ১৯৮৯ সনে তিনি শেরপুর সরকারী কলেজ থেকে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর তিনি পুনরায় সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৯০ সনে জামালপুরের উল্লেখযোগ্য মুক্তি সংগ্রামীদের পরিচয় দিয়ে পুস্তক প্রকাশ, সংবর্ধনা ও পদক প্রদান করে সম্মানিত করেন। তিনি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জামালপুর জেলা শাখার প্রথম আহবায়ক নির্বাচিত হন। ১৯৫৪ সন থেকে ১৯৮৯ সন পর্যন্ত তিনি ৩৫ বছর অধ্যাপনার কাজে নিযুক্ত থেকে শিক্ষকতার পাশাপাশি অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মীও তৈরী করেছেন। তিনি বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর উপদেষ্টা মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য এবং গণতন্ত্রী পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। এই মহান ব্যক্তি ৩ জুন ২০০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।