নামায ইসলামের অনেক বড় একটি রুকন (ভিত্তি) এতে বিন্দু মাত্রও সন্দেহ নেই। আর নামায ফরয করা হয়েছে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত প্রত্যেক আকেল, বালেগ মুসলমানের উপর। কিন্তু বড় পরিতাপের বিষয় এই যে, আজ মুসলমানগণ এই গুরুত্ব পূর্ণ ইবাদত নামাযের মাসায়েল সম্পর্কে অনেকেই অনবগত। এ মাসাআলা না জানার কারণে মুসলমানগণ নামায পড়ে ঠিকই, কিন্তু বঞ্চিত হচ্ছে নামাযের সওয়াব থেকে। কখনো কখনো তো এমন ভুল করে বসে, যার ফলে নামায নষ্ট হয়ে যায়। মোট কথা হল- মানুষ ভুল করবে, এটাই স্বাভাবিক। কারো ভুল কম হয় আবার কারো বেশী। এ ভুল যেমনি লেনদেনে হয়। তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত নামাযেও হয়। কখনো নামাযী নামাযের কোন ফরয কিংবা ওয়াজিব ভুলবশত ছেড়ে দেয়। কখনো নামাযের ধারাবাহিকতা নষ্ট করে ফেলে। আবার কখনো নামাযের কোন ফরয কিংবা ওয়াজিবকে একাধিকবার আদায় করে ফেলে। আবার কখনো ইচ্ছায় অনিচ্ছায় ছেড়ে দেয় নামাযের সুন্নত ও মুস্তাহাব বিষয়গুলো। ভুল হয় ক্বেরাতেও। এমন অনেক ভূলভ্রান্তি হয়ে থাকে নামাযে। তার মধ্যে কিছু ভুল তো এমন আছে, যার দ্বারা নামায ফাসেদ (নষ্ট) হয়ে যায়। কিন্তু মাসআলা না জানার কারণে অনেক মসজিদের ইমাম সাহেবগণও মনে করেন, এটা তো এমন ভুল, মনে হয় সাজদায়ে সাহু করলে নামায সহীহ হয়ে যাবে। আবার কতক এমন ভুলও হয় যার দ্বারা সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় কিন্তু মাসআলা না জানার দরুণ সাজদা করে না। অথচ তার উপর সাজদায়ে সাহু করা জরুরী ছিল। মাঝে মাঝে নামাযী ব্যক্তি থেকে এমন কিছু কাজ প্রকাশ পায়, যাকে মনে করা হয় এই ভুলে সাজদায়ে সাহু করতে হবে। অথচ এটা মূলত এমন একটা কাজ ছিল, যার দ্বারা সাজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয় না। কিন্তু মাসআলা না জানার কারণে সাজদায়ে সাহু করে ফেলে। যদিও তা নামাযে হওয়াটা অনুচিত। মাসআলার ব্যাপারে মানুষের অজ্ঞতা এতই বেড়েছে যে, তারা মনে করে, যে কোন ভুলের কারণে সাজদায়ে সাহু করলেই নামায শুদ্ধ হয়ে যাবে। কিছু লোক তো এমন আছে, সামান্য সন্দেহ হলেই তারা সাজদায়ে সাহু করা শুরু করে । আর কতক লোক যারা শরীয়ত ও মাসআলা সম্পর্কে কিছু জানে তাদের অবস্থা হলো- তারা নির্দিষ্ট দু-চারটা ভুল হলে সাজদায়ে সাহু করে। অন্য কোন ভুল হলে সাজদায়ে সাহু করে না। অনেক জায়গায় দেখলাম মানুষ নামায পড়ে, কিন্তু কিছু কিছু ভুলের কারণে তাদের নামায নষ্ট হয়ে যায়। তাই আমি অধম ইচ্ছা করলাম সাজদায়ে সাহুর কিছু মাসাআলা একত্রিত করে দেই। যাতে মানুষের নামায নষ্ট না হয় । এই কিতাবে সাজদায়ে সাহুর মাসআলা গুলো লেখার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে কখনো কখনো অন্য দু-একটা মাসআলাও উপকার মনে করে লেখা হয়েছে। মাসআলার গ্রহণ যোগ্যতার জন্য তার হাওয়ালাও লেখা হয়েছে।