বিশ্বব্যবস্থায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময়টি ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পূর্ববর্তী বিশ্বব্যবস্থা ছিল টালমাটাল ও অনিশ্চয়তায় পরিপূর্ণ। সে সময় রাষ্ট্রগুলো যথাযথ রাষ্ট্র হিসাবে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছিল প্রতিনিয়ত। ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো যেন তাদের উপনিবেশগুলোকে ধরে রাখতে পারছিল না। বৃহৎ শক্তি যুক্তরাষ্ট্র তার একাকিত্ব নীতি (Monroe Doctrine)বাদ দিয়ে বিশ্বরাজনীতিতে প্রবেশ করে বিশ্বব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আনার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছিল অনিবার্য। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর স্নায়ুযুদ্ধকালে অনিশ্চয়তা থাকলেও একটা কার্যকর নিবারক (Deterrence) প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দুই বৃহৎ পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে। ফলে এক ধরনের স্থিতিশীলতা বিরাজ করছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর যে বাস্তবতা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তায় ক্রমশ বিকশিত হচ্ছিল তা ছিল চমকপ্রদ। ইনসারজেন্সি, জাতিগত সংঘাত, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, ধর্মীয় উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ইত্যাদি একের পর এক আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে আসছিল। ফলে এই দশকটি (২০০১-২০১০) ছিল নিরাপত্তা সংকটে। এই দশকের আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিয়ে বিশ্লেষক নিগার সুলতানা সীমি বেশ কয়টি নিবন্ধ লেখেন যা জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত। আমরা জানি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে বিশ্লেষণ করতে পূর্ববর্তী ঘটনা বা ইতিহাস অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কোনো রাষ্ট্রকে তার পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নে এ ধরনের সংকটগুলো বিশ্লেষণ করতে হয়। বর্তমানে যখন বিশ্বনিরাপত্তায় আবার যুদ্ধবিগ্রহ দেখা যাচ্ছে, ছোটো রাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তা যখন আবার হুমকির মুখে পড়ছে ও নিরাপত্তা সংকট প্রকট, সে সময়ে রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়নে এবং বৃহৎ শক্তিগুলোর আচরণ কেমন হবে তা নির্ধারণে অতীতের বিশ্লেষণ পর্যালোচনা করা আবশ্যকীয় হয়ে পড়েছে। নিগার সুলতানা সীমি সে সময়ে যে বিশ্লেষণধর্মী নিবন্ধ লিখেছেন সেগুলো সময়ের বিবেচনায় গুরুত্বপূর্ণ এবং ধারাবাহিকতা পর্যালোচনায় ইতিহাস বিশ্লেষণ খুবই কার্যকর বিধায় নিবন্ধগুলো পুস্তক আকারে প্রকাশ করা একটি দায়িত্ব মর্মে আমার কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। বইটি প্রকাশ করে একটি সামাজিক দায়িত্ব পালনের অনুভূতি কাজ করছে নিজের মধ্যে। এস. এম. মহিউদ্দিন প্রকাশক
Title
স্নায়ুযুদ্ধোত্তর বিশ্বে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা - (প্রেক্ষিত ২০০১-২০১০)