প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন।
মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
follower
আল্লামা ইবনে ফজলুল্লাহ উমরি রহ. ৭০০ হিজরির ৩রা শাওয়াল দিমাস্কে জন্মগ্রহণ করেন। তার মূল নাম আহমদ। উপাধি, আল-কাজি, আল-ফকিহ, আল-আদিব, কাতিবুস-সির, ইমামুল ফাজিল। বংশ সম্পর্কে জানা যায়, তারা ছিলেন হযরত উমর রাযি.-এর বংশধর। এ জন্য তারা ‘উমরি’ নামে প্রসিদ্ধ লাভ করেন। আর ‘ফজলুল্লাহ’ হলো মিশরের মামলুক সালতানাতের সচিবদের একটি বংশের নাম। আবুল মাআলি ফজলুল্লাহ ছিলেন এ বংশের প্রতিষ্ঠাতা। শিক্ষা তিনি কায়রো ও দিমাস্কের বিখ্যাত মনীষীদের কাছে বিভিন্ন শাস্ত্রের জ্ঞানার্জন করেন। শায়খ কামালুদ্দিন ইবনে কাজি শুহবা ও কাজিউল কুজাত শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইবনে মুসলিমের কাছে আরবি ভাষা শেখেন। ফিকহ শিক্ষা করেন কাজিউল কুজাত শিহাবুদ্দিন মুহাম্মদ ইবনে মজদে আবদুল্লাহ ও শায়খুল ইসলাম বুরহানুদ্দিনের কাছে। আহকামুস সুগরা, ইলমুল আরূজ, সাহিত্য, নজম, মাআনি ওয়াল বায়ান, উসুল ইত্যাদি বিভিন্ন শাস্ত্রীয় জ্ঞানার্জন করেন বিখ্যাত মনীষীদের নিকট। কর্ম তার বংশের অনেকেই মামলুক সালতানাতের কাতিবুস-সির (প্রাইভেট সেক্রেটারি)-এর দায়িত্ব পালন করেছেন। পিতার সঙ্গে তিনিও দিমাস্ক ও মিশরের উক্ত পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া সুলতানকে পত্রপাঠ করে শোনানোর দায়িত্বও পালন করেন তিনি। বিচার বিভাগের কাজি পদেও নিয়োজিত ছিলেন। অমর কীর্তিসমূহ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছেন। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ কয়েকটি গ্রন্থ হলো : ১. ‘মাসালিকুল আবসার ফি মামালিকিল আমসার’। এটি একটি সুবিশাল বিশ্বকোষ। এতে ইতিহাস, ভূগোল, সাহিত্য. জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসা ও সমাজবিজ্ঞান প্রভৃতি শাস্ত্রে বিশদ আলোকপাত করা হয়েছে। অষ্টম হিজরির প্রথমার্ধে তিনি এ সুবিশাল গ্রন্থটি ২৭ খণ্ডে রচনা করেছিলেন। ২. ‘আত-তারিফ বিল-মুসতালিহিশ শরিফ’। এতে দিওয়ান, তথা রাজদরবার-বিচারালয় ও দিওয়ানুল ইনশা (রাষ্ট্রীয় পত্রাদি)-সংক্রান্ত কাজে প্রয়োজনীয় বিভিন্ন বিষয়াদি উল্লেখ করা হয়েছে। ৭৪১ হিজরিতে তিনি এটি রচনা করেন। ৩. ‘মামালিক উব্বাদিস সালিব’। এতে তিনি নিজের যুগের ক্রুশের পূজারি তথা ফ্রান্স, জার্মানসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা তুলে ধরেছেন। তা ছাড়া বুন্দুকিয়া, ইতালি ও জিনোয়ার লোকদের অবস্থা ও মুসলমানদের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের দিক নিয়েও আলোকপাত করেছেন। ১৮৮৩ ঈসায়িতে গ্রন্থটি ইতালিয়ান অনুবাদসহ রোম থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া আরও রয়েছে- ৪. নুজহাতুল কাফিয়া ফি মারিফাতিল কিতাবা ওয়াল কাফিয়া। ৫. দামআতুল বাকি ওয়া ইয়াকযাতুশ শাকি। ৬. জাহাবিয়্যাতুল আসর। ৭. সাবাবাতুল মুশতাক। ৮. তাশবিয়্যাত (চিঠিসমগ্র)। ৯. আদ-দাওয়াতুল মুসতাজাবা। ১০. সাফরাতুস সাফরা। ১১. ফাওয়াদিলুস সামার ফি ফাজায়িলি আলে-উমর। ১২. আদ-দুরারুল ফারাইদ। ১৩. আদ-দায়িরা বায়না মাক্কা ওয়াল বিলাদ। ১৪. তাজকিরাতুল খাতের। ১৫. হুসনুল ওয়াফা। ১৬. আল-জাওয়াহিরুল মুলতাকাতা। মৃত্যু ৭৪৯ হিজরিতে (মোতাবেক ১৩৪৯ ঈসায়ি) শনিবার আরাফার দিন তিনি ইন্তেকাল করেন। তার সম্পর্কে আল্লামা সফদি রহ. লিখেছেন, ‘চেঙ্গিসি মোগল, হিন্দুস্তান ও তুর্কি সুলতানদের ইতিহাস সম্পর্কে তার মতো জ্ঞানী দ্বিতীয় কেউ নেই। অনুরূপভাবে বিভিন্ন দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, উৎপন্ন শস্য ও আয়, বৈশিষ্ট্য এবং সেখানকার পথঘাট বিষয়ের জ্ঞানেও তিনি ছিলেন যুগের ইমাম (অর্থাৎ অনন্য ব্যক্তি)।’
(Showing 1 to 1 of 1 items)
demo content