প্রিয় গ্রাহক, রকমারি আপনার পছন্দের ক্যাটাগরির নতুন যে কোন পণ্য এবং এক্সক্লুসিভ সব অফার সম্পর্কে সবার আগে জানাতে চায়।
প্রিয় ,
সেদিন আপনার কার্টে কিছু বই রেখে কোথায় যেন চলে গিয়েছিলেন। মিলিয়ে দেখুন তো বইগুলো ঠিক আছে কিনা?
followers
মাসুম বিল্লাহ
যদি পেছন ফিরে দেখি, দেখতে পাই—একটা নির্ঝঞ্ঝাট জীবন পার করে এই মধ্যদুপুরে এসে দাঁড়িয়ে আছি। সহজ-সরল আর পরিচ্ছন্নতার একটা অদৃশ্য চাদরে ঢেকে আছে এই মনুষ্যজীবন। অর্থকড়ির সঞ্চয় বলতে কানাকড়িও নেই।— আমার কেবলই মনে হয়, এই সুবাদে আল্লাহ বললেন— 'যা, তোকে মাফ করে দিলাম'। এই আয়ুকালে ছোট ছোট আনন্দে এতটাই বিভোর ছিলাম যে, বড়কিছুর কথা মাথাতেই আসেনি! সাদাভাত, আলুভর্তি, ডিমভাজি, চিংড়িভর্তাময় মেন্যুটাকেই মনেহয় বেহেস্তীখানা। একটা ভালো গান শোনা, একটা ভালো সিনেমা দেখা, একটা ভালো বই পড়াকেই জীবনের সুখ বলে জ্ঞান করে এসেছি। প্রিয়শৈশব থেকে...এসবেই এভাবে ভেসে গেল এই জীবন। চড়ুইয়ের ডানা ঝাপটানো আর গাছের সবুজ পাতা দেখে দেখে মন ভালো হয়ে গেছে অনেকবার। মানুষের নির্মোহ আর নির্মল হাসি দেখতে পেলেও বুকের ভার নেমে গেছে বার-বার। ফুলের শরীর ছুঁয়ে পবিত্র হয়েছি প্রতিবার। মহান সৃষ্টিকর্তার পৃথিবীতে কেবল সুন্দরের লুটোপুটি, চারপাশে কেবল মুগ্ধতার ছড়াছড়ি। বেখেয়ালেও নয়, ইচ্ছে করেও কখনও ছোট্ট সবুজ একটি কচি পাতা ছিঁড়িনি, একটা ছোট্ট ফড়িংকে কখনও কষ্ট দিয়েছি বলে মনে পড়ে না। আমি কেন এসব করতে যাবো, হ্যাঁ? আমি তো এসবের সৃষ্টিকর্তা নই! তাই তো, সবসময় একটা কথা মনে রাখি— কেউ আমার মুখ মলিন করলেও, আমি যেন কারোর মুখ মলিন না করি; আমার কারণে যেন কারোর মুখ মলিন না-হয়। তাই-তো রাতের আকাশে চেয়ে প্রার্থনায় মগ্ন হয়ে বলেছি— মাবুদ, আর যা-ই করো, আমাকে তোমার দরদ থেকে কখনও দূরে রেখো না। রাখেনওনি তিনি। সৃষ্টিকর্তাকে আবারও কুর্ণিশ। তবুও ছোট ছোট লোভে পড়ি বার-বার— একটা ছোটগল্প লিখে এত খুশি হই, তা দেখে হয়ত মাবুদ মনে-মনে হাসেন আর বলেন— 'মাসুম বিল্লাহ, এত বোকা হলে চলে রে'! আবার, যখন, গল্পগুলো জড়ো করি মলাটবন্দির আশায়—তখনও হয়ত মাবুদে ইলাহির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে— 'তোর পকেটে তো ফুটো-পয়সাও নেই! তা কী করবি রে এখন পাগলা?' হুম, তাই তো! গালে হাত চলে যায় লেখক— মাসুম বিল্লাহ'র! তখন মাবুদে রহমান এগিয়ে আসেন, বলেন— 'আমার নাম নিয়ে নেমে পড়। দেখবি উপায় একটা হবে।' হ্যাঁ। নেমে পড়ি। ঠিক, উপায় একটা হয়ে-ই যায়। শুধু কী তাই! না তো—কিছু মানুষ, কিছু হৃদয়বান মানুষ সবসময় আমার পাশে থাকেন, তারা এই লেখকের প্রতি বেশি-বেশি ভালোবাসা দেখিয়ে আসছেন প্রতি বার! যারা আমার ও আমার বইগুলোর প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতিও যেন মাবুদ শতগুণ ভালোবাসা দেখান—সে প্রার্থনা করি সতত। আর আমার পাঠক যারা—তাদের জন্য ভালোবাসাও কম হয়ে যায়, তবুও অফুরান কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা চিরদিন। হে পাঠক, জেনে থাকবেন যে— ❝সত্যিকার অর্থে লেখকদের জীবন এক টুকরো কালো মেঘ এবং পাঠকের ভালোবাসা হলো সে কালো মেঘের আড়ালে এক ফালি রোদ। ❞ শেষমেশ জন্মস্থান খুলনাতেই থিতু হওয়া, কাজের মধ্যে পারি এই লেখালেখিটাই, লেখালেখিতেই দিন যায়, রাত যায়। অলসতা প্রিয় বলে লিখি কম, প্রথম লিখি ২০০৯ এর জুলাইয়ের শেষ দিকে। সে-ই শুরু। দেশের দুই-একটা পত্রিকা ছাড়া সবখানে লেখা প্রকাশ হয়েছে। "ম" নামে একটা লিটলম্যাগ বের করতাম, যা এখন অনিয়মিত। প্রথম আলো বন্ধুসভার "লেখার ইশকুল" পরিচালনা ও সম্পাদনা করেছি, পাশাপাশি বন্ধুসভার জাতীয় কমিটির সাহিত্য সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি ২০১৫ - ২০১৬তে। বইও একে-একে ৭টা বের হয়ে গেল— প্রথম বই (ফিচারধর্মী) ২০১৩তে, 'মেঘের শাড়ি পরা মেয়ে', কিশোর উপন্যাস "ভূতু" ২০১৫তে, উপন্যাস "অবুঝ সেফটিপিন" ২০১৬তে, গল্পগ্রন্থ "প্রেম অথবা ঘুমের গল্প" ২০১৭তে, গল্পের বই "পিঙ্গল প্রেম" ও কিশোরগল্পগ্রন্থ "ডানা ভাঙা সাইকেল" ২০২০এ বের হলো। ২০২১ জানুয়ারিতে দিব্যপ্রকাশ থেকে বের হলো— "একটা দুপুর মরে গেল" নামের গল্পগ্রন্থটি। প্রকাশিতব্য বইয়ের তালিকায় আছে— গল্পগ্রন্থ "অশ্রুত" উপন্যাস "অতলান্তে", "একা এবং নিঃসঙ্গ" কিশোর উপন্যাস "আবারো ভূতু" আমার প্রথম ও শেষ পরিচয় হিসেবে যদি কিছু টিকে থাকে, তা হলো— মাসুম বিল্লাহ একজন খুব ভালো পাঠক ছিল। তবে আমি 'গল্প' লিখতেই ভালোবাসি—বিশেষকরে ছোটগল্প। তাই-তো আমি চাই (আমার গোপন লোভও বটে), 'যেদিন আমি মরে যাব সেদিনও লোকে আমাকে স্মরণ করে আমার সম্পর্কে বলুক : ❝মাসুম বিল্লাহ ভালো গল্প লিখতে পারত, আমরা তার লেখা গল্পগুলো পড়ে মুগ্ধ হই।❞