নাওমি ওয়াতানাবের বাংলাদেশের জীবন সংগ্রাম ও তার দেখা বাংলাদেশের নানারকম দৃশ্য “যাপিত জীবনে আমার বাংলাদেশ” বইয়ে অংকিত হয়েছে। একজন বিদেশী নারীকে বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একটি হাসপাতালে সরাসরি নিযুক্ত করা হয়েছে। এবং সে পরিবার দেশে রেখে একা বাংলাদেশে ৫ বছর বাস করেছে। এই পরিস্থিতি এবং অকল্পনীয় কঠোর দৈনন্দিন জীবন থেকে পাওয়া বাংলাদেশের নানারকম ধারণা ও তার অভিজ্ঞতা এই বইতে প্রকাশিত হয়েছে। এই বইয়ের কাহিনীর চরিত্র হলো দিনমজুর, ৩ নম্বর বাসের কন্ডাক্টর, শিশু দোকানী ইত্যাদি দৈনন্দিন জীবনের জন্য সংগ্রাম করা মানুষরা। নাওমি ওয়াতানাবে তাদের সুখ ও দুঃখের দৃশ্য ধীরস্থিরভাবে দেখেছে। নাওমি ওয়াতানাবের দৃষ্টির মধ্যে আছে একজন সাধারণ মানুষের মানব প্রেম । তাছাড়া বইতে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের হাসপাতালে কাজ করা অভিজ্ঞতা নিয়ে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টরের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম, নিজের ওজন কমানোর অভিজ্ঞতা, পুষ্টিগত পরামর্শ, বাংলা গানের জন্য ভালোবাসা, রেওয়াজ ইত্যাদি । সাথে সাথে বর্তমান জাপানের কিছু মজার বিষয়ও এই বই থেকে পাওয়া যাবে। আর মানবতাবাদী লেখক নাওমি ওয়াতানাবে হৃদয়ের উষ্ণউত্তাপ ছড়িয়ে আছে এ বইয়ের পাতায় পাতায় ।
মানবতাবাদী লেখক নাওমি ওয়াতানাবে ১৯৬৬ সালের ১০ই এপ্রিল জাপানের হোক্কাইডো জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক স্কুল থেকে হাই স্কুল পর্যন্ত হোক্কাইডো জেলার সুবিশাল প্রকৃতির মধ্যে উৎফুল্লভাবে তাঁর বেড়ে ওঠা। নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ালেখা শেষ করে চলে যান ভারতে। ১৯৯৮ সালে ১ বছর ভারতের কলকাতায় রামকৃষ্ণ মিশন থেকে গবেষণা করেন। ১৯৯১ সালে নিইগাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে L.L.B.ডিগ্রি পাওয়ার পর মাস্টার্স প্রোগ্রামে বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিযে গবেষণা করে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন ।পড়ালেখা শেষ করে জাপানের বেসরকারি জুনিয়র কলেজে প্রশাসক হিসাবে ১৫ বছর কাজ কারেন। সাথে সাথে জাপানের স্থানীয় এনজিওতে বাংলাদেশের একটি গ্রামের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রকল্প ব্যবস্থাপক হিসাবে ১০ বছর স্বেচ্ছাসেবকের কাজ করনে। এই স্বেচ্ছাসেবকের কাজের জন্য ২০১০ সালে Japan Soroptimist Foundation থেকে Social Volunteer Award লাভ করেন। নাওমি লিখছেন নিয়মিত। শত সংকট ও ব্যস্ততার মধ্যেও লিখছেন। বর্তমান ছোটগল্পের সংকলন ‘প্রতিবেশীগণ’ তাঁর প্রকাশিত ষষ্ঠ বাংলা গ্রন্থ।