জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিন বছর মেয়াদী বি.এ./বি.এসসি./বি.এস.এস পাস কোর্স চালু শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় এক উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। অন্যান্য বিষয়ের ন্যায় ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়েও চতুর্থ পত্র একটি নতুন সংযোজন যার শিরোনাম ‘সাংস্কৃতিক ও নগর ভূগোল' (Cultural and Urban Geography)। স্নাতক পাশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের এ বিষয়টি তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করতে হবে। মানব জাতির বিবর্তনের ইতিহাসে সংস্কৃতি ও সভ্যতা ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। আবার সংস্কৃতি একটি জাতির সভ্যতার পরিচায়ক। যে জাতির সংস্কৃতি যত সমৃদ্ধ, সে জাতি তত উন্নত। স্থানীক (Spatial) ও কালিক (Temporal) প্রেক্ষাপটে ভূপৃষ্ঠে বসবাসকারী মানবগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক উপাদান (Elements) ও নিয়ামকগুলোর (Phenomena) ধরন ও বণ্টনে বিভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। সাংস্কৃতিক বিষয়াবলীর পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও বিবর্তনের পথ ধরেই এক সময়ের গুহাবাসি আদিম মানুষ আজ পৃথিবীর বুকে সভ্যজাতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। সুদীর্ঘ সময় ধরে এ পরিবর্তন কিভাবে ঘটেছে, এখনো কিভাবে ঘটছে, পরিবর্তনের স্তরগুলোর স্বরূপ কেমন, বিভিন্ন জাতিসত্ত্বার বিকাশের ধারা কিরূপ ইত্যাদি বিষয় সাংস্কৃতিক ভূগোলের বিস্তীর্ণ দিগন্তে পর্যালোচনা করা হয়ে থাকে । নগর মানুষের বহুমুখী কর্মকাণ্ড বিশেষ করে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ের আর্থনীতিক কর্মকাণ্ডের আধার। নগর একটি দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নতির সাক্ষর। যখন যেখানে যেভাবেই একটি নগরের উৎপত্তি হোক না কেন, জনসংখ্যার ক্রমবৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের সুযোগ, গ্রাম-নগর অভিগমন, উন্নত জীবনের মোহ প্রভৃতি কারণে নগরায়ণের ধারায় পরিবর্তন সূচিত হয় এবং পারিসরিকভাবে নগর সুবিধাজনক দিকে ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেতে থাকে। নগরবাসির সুখ-স্বাচ্ছন্দ, আরাম- আয়াসসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সুবিধাদি প্রদান করতে গিয়ে নগর প্রশাসনকে নগর সংক্রান্ত তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক নীতিমালা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হতে হয়। সার্বিক দিক থেকে নগর পরিণত হয় আধুনিক অথচ জটিল জনপদে। অনেক সময় নগরে বিদ্যমান সমস্যাসমূহের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে তথা টেকসই ও পরিকল্পিত নগর গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজন হয় নগরে নগরে সহায়তার। এভাবে নগর ও নগর সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির বিস্তৃত আলোচনা ও অধ্যয়ন করা হয় নগর ভূগোলে ।