প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা এসে পড়ল বিনতার কপালে। আকস্মিক ঠান্ডা স্পর্শে চমকে উঠল বিনতা। তারপর চিরদীপের দিকে ফিরে বলল, নাও, শুরু হল। চিরদীপের বলিষ্ঠ হাতের পাঞ্জা স্টিয়ারিংয়ে নিথর। মুঠোর ভঙ্গিতেই আস্থা ও অহঙ্কার স্পষ্ট। সামনের উইন্ডশিল্ড-এ ধারাবাহিক শব্দে এসে আছড়ে পড়ছে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো। আঘাত করেই ওয়াইপারের ঠেলায় ছড়িয়ে যাচ্ছে মসৃণ কাচের ওপর। চিরদীপ টান-টান হয়ে ঋজু স্থাপত্যের মতো বিনতার পাশে বসে। ফরসা মুখ, লম্বা টিকলো নাক, ছোট-ছোট চোখ, চোয়াল সামান্য ভাঙা। পাতলা নীল টেরিকটন জামার নীচে কাঁধের জান্তব পেশি সহজেই চোখে পড়ে। সব মিলিয়ে যেন কোনও পাকা অ্যাথলিট। এবং সত্যিই চিরদীপ সরকার সারা দেশে সুপরিচিত। এবারের দিল্লির এশিয়ান গেমস-এ ডেকাথলন ও পেন্টাথলন-এ ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে সে। বিনতার কথায় ফিরে তাকাল আনলেই হত। এখন ভিজতে হবে। চিরদীপ, বলল, এই হুড খোলা স্পোর্টস কারটা না ওর কথা শেষ না হতেই বৃষ্টির তেজ তিনগুণ বেড়ে গেল। সেইসঙ্গে পাগলা হাওয়ার মাতন। আকাশে মেঘ সকাল থেকেই ছিল। তবে বৃষ্টি যে নামবে এটা ভাবা যায়নি। কারণ আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা ছিল, বর্ষার আবির্ভাব হতে এখনও দিনদশেক দেরি।
Onish Dev জন্ম ২২ অক্টোবর ১৯৫১, কলকাতায়। স্কুলের পড়াশোনাঃ হিন্দু স্কুল। সাম্মানিক পদার্থবিজ্ঞানে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক এবং ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে বি. টেক, এম.টেক. ও পিএইচ.ডি.। পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি স্বর্ণপদক ও একটি রৌপ্যপদক। কর্মজীবনে ১৯৮৩ সাল থেকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে লেকচারার। ১৯৯০ থেকে ওই বিভাগেই রিডার, আর ১৯৯৮ থেকে প্রফেসার। লেখালেখির শুরু ১৯৬৮-তে, অধুনালুপ্ত ‘মাসিক রহস্য পত্রিকায়। প্রকাশিত কয়েকটি গল্পগ্রন্থঃ অনীশের সেরা ১০১, অশরীরী ভয়ংকর, দেখা যায় না শোনা যায়, তেইশ ঘণ্টা ষাট মিনিট, ষাট মিনিট তেইশ ঘণ্টা, বারোটি রহস্য উপন্যাস, পাঁচটি রহস্য উপন্যাস, ভয়পাতাল, কিশোর কল্পবিজ্ঞান সমগ্র, বিশ্বের সেরা ভয়ংকর ভূতের গল্প, ভৌতিক অলৌকিক, সেরা সায়েন্স ফিকশন সমগ্র ইত্যাদি। জনপ্রিয়-বিজ্ঞান গ্রন্থঃ বিজ্ঞানের হরেকরকম, সহজ কথায় ইন্টারনেট, কেমন করে কাজ করে যন্ত্র, রোমাঞ্চকর ধূমকেতু ইত্যাদি। প্রধান নেশা ও রহস্য-গোয়েন্দা, অলৌকিক ও কল্পবিজ্ঞান কাহিনি লেখালেখি, জনপ্রিয় বিজ্ঞানচর্চা, বিজ্ঞান গবেষণা এবং কম্পিউটার। পুরস্কারঃ প্রাচীন কলাকেন্দ্র সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৮), ড. জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ জাতীয় পুরস্কার (১৯৯৯), পাই নিয়ে রূপকথা বইয়ের জন্য দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নরসিংহ দাস পুরস্কার (২০১২) ও দীনেশচন্দ্র স্মৃতি পুরস্কার (২০১৩)। সম্পাদনা করেছেন অল্পকালজীবী কয়েকটি মাসিক পত্রিকা ও বিমল করের ‘গল্পপত্র’ পত্রিকার বিশেষ কল্পবিজ্ঞান সংখ্যা।