নোবেলজয়ী ইংরেজ নাট্যকার হ্যারল্ড পিন্টার পরিচিত প্রধানত ইংরেজি সাহিত্য বা নাটকের ছাত্রদের কাছেই। বিশ্বনাট্যের অন্যান্য কীর্তিমান লেখক বা নাট্যকাররা পাঠ্যসূচীর গণ্ডি ছাড়িয়ে নাট্যামোদী দর্শকদের কাছে পরিচিত হয়েছেন তাঁদের নাটকের প্রযোজনা গুণে। সেদিক থেকে সমকালের পিন্টার কিন্তু অনেকটা অজানাই রয়ে গেছেন। এর প্রধান কারণ তাঁর নাটকের মানসম্মত বাংলা অনুবাদের অভাব। একমাত্র যথাযথ অনুবাদ সুপ্রযোজিত হলেই একজন বিদেশি নাট্যকার দর্শকদের কাছে আদরণীয় হয়ে উঠতে পারেন। সেই সঙ্গে উৎসাহ সৃষ্টি হতে পারে পাঠকরেও মধ্যে। আমাদের দেশের কীর্তিমান নাট্যকার-নির্দেশক-সংগঠক ও নাট্যপত্র সম্পাদক রবিউল আলম হ্যারল্ড পিন্টারের চারটি নাটকÑ The Birthday Party, A Slight Ache, The Dumb Waiter ও The Homecoming বাংলায় অনুবাদ করে নাট্যামোদীদের কৃতজ্ঞতাভাজন হয়েছেন। তাঁর অনুবাদ ঝরঝরে এবং অভিনয়যোগ্য। মঞ্চের মানুষ বলে অনুবাদ করার সময় মঞ্চায়ন করার কথা খেলায় রেখেছেন। রবিউল আলমের অনুবাদের সুবাদে হ্যারল্ড পিন্টারের চারটি প্রধান নাটক এখন নাট্যকর্মী তথা নাট্যামোদীদের হাতের নাগালে। কেবল সাহিত্য হিসেবে পাঠ্য নয়, অনূদিত নাটকগুলো যদি প্রযোজিত হয় তবে এদেশের নাঠ্য প্রযোজনার ক্ষেত্রেও একটা বৈচিত্র্য আসবে। অনুবাদ : রবিউল আলম জন্ম বগুড়ায় (নভেম্বর, ১৯৪৬)। তবে কর্মস্থল চট্টগ্রামেÑপেশা ও নেশা উভয় ক্ষেত্রেই। তিনি চট্টগ্রামের তির্যক নাট্যগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠার (১৯৭৪) মাধ্যমে গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন। নাট্যক্ষেত্রে রবিউল আলমের পরিচয় নানামুখী হলেও তিনি মূলত নাট্যকার। মধ্যবিত্ত জীবনের আনন্দ-বেদনাকে খুব কাছে থেকে ধরতে সিদ্ধহস্ত তিনি। অনুবাদ করেছেন শেক্সপিয়র (অ্যাজ ইউ লাইক ইট), মলিয়ের (বিবি পাঠশালা), হ্যারল্ড পিন্টার (চারটি নাটক) ও ইয়াসমিনা রেজার (দাফনের পরের সংলাপ) নাটক। মিখাইল শ্চেদ্রিন, আবু রুশদ, মাহ্বুব-উল আলম ও সুচরিত চৌধুরীর গল্প অবলম্বনে নাটক লিখেছেন কয়েকটি। সত্তর দশকে সম্পাদনা করেছেন তির্যক নাট্যত্রৈমাসিক পত্রিকা। বেতার টেলিভিশনের নাট্যকার, অভিনেতা ও অতিথি প্রযোজক।
Harold Pinter, (১৯৩০-২০০৮) একাধারে নাট্যকার, চিত্রনাট্যকার, নাট্যনির্দেশক, অভিনেতা ও কবি। পূর্ব লন্ডনের হ্যাকনিতে জন্ম। সেন্ট্রাল স্কুল অব স্পিচ অ্যান্ড ড্রামায় শিক্ষালাভ করেন। ইংলিশ রেপার্টরিতে অভিনয় করেছেন দীর্ঘদিন। কবিতা, চিত্রনাট্যের জন্য পেয়েছেন সম্মাননা পুরস্কার। ২০০৫ সালে পেয়েছেন সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার এবং ২০০৭ সালে ফরাসি সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘লিজন দ্য অনার।