"ইস্পাত (অখণ্ড)" বইয়ের ভূমিকা থেকে নেওয়া কথা: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার রুশদের জীবন কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে লেখা। প্রথমে রুশ ভাষায় এবং পরে (অস্ত্রভস্কির মৃত্যুর পর ১৯৩৭ সালে ইংরেজি ভাষায় অনুদিত হয়ে সারা বিশ্বের মানুষের হাতে এসে পৌঁছে বইটি। মূলত জীবনের গল্প হিসেবেই ইস্পাত কাহিনীনির্ভর। ইস্পাত উপন্যাসের প্রতিটি ছত্রে ছত্রে যেন ফুটে উঠেছে সেইসময়কার রুশ বিপ্লবের বিরত্বগাথা। গল্পের নায়ক পাভেল-এর জীবনবােধ, সংগ্রামী চেতনার বলিষ্ঠ অঙ্গিকার, হতাশা, ব্যর্থতা মিলেমিশে জন্ম নেয় এক অন্য কাহিনীর। পাভেল যেন তল্কালীন রুশ বিপ্লবের এক গর্বিত সৈনিক। পাভেলের চরিত্রের মধ্যে যেন নিকোলাই অস্ত্রভােস্কির এক অন্য রূপ পরিগ্রহ করা যায়। সমগ্র সােভিয়েত রাশিয়ার আপামর খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের সাথে বীরপ্রতিক তরুণ তরুণীদের সাহস, স্বপ্ন, প্রেম আর সংগ্রামের অবিচ্ছেদ্য জীবনবােধ যেন চলচ্চিত্রের সেলুলয়েডের মতাে পাঠকের সামনে বাঙময় হয়ে ওঠে। উপন্যাসটি পড়ার সময় মনে হয়, এর প্রতিটি অনুচ্ছেদই যেন এক একটি পূর্ণাঙ্গ কাহিনীর রূপান্তরিত অন্যরূপ। জীবনের সকল হতাশা, বাধা-বিপত্তি আর অত্যাচার অবিচারের পাহাড়কে প্রবল দুঃসাহসের সাথে পার হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার যে অসীম অনুপ্রেরণা- সেটা প্রত্যক্ষ করা যায় এই গ্রন্থে। আর তাইতাে পৃথিবী জুড়ে সাহিত্যমােদীদের কাছে ইস্পাত শুধু একটি গল্প গ্রন্থ নয়। এ যেন সাধারণ মানুষের হৃদয়ে অনুপ্রেরণা যােগাবার এক অসম বিপ্লবের অপ্রতিরােধ্য আহ্বান। বস্তুত নিকোলাই অস্ত্রভস্কি নিজেও ছিলেন স্বাধীনতাপ্রিয় এক দুর্দান্ত বিপ্লবী সৈনিক।