বাংলা একাডেমী প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ২য় খন্ড এটি কোন পাঠ্যপুস্তক নয়, সর্বশ্রেণির ভাষা-সচেতন পাঠকের জন্য এ বই রচিত এবং বাংলা ব্যাকরণচর্চার ক্ষেত্রে এটিই প্রথম সমবেত প্রাতিষ্ঠানিক ও ঐতিহাসিক প্রয়াস।বিশ্বের বাংলাভাষী মানুষের আনুষ্ঠানিক ভাষার বিশ্লেষণ ও বর্ণনাই এ বই রচনার প্রধান লক্ষ্য। প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ বাংলা একাডেমীর উদ্যোগে দুই খণ্ডে প্রণীত বাংলা ভাষার ভাষাতাত্ত্বিক। এর প্রথম খণ্ডে আছে- বাংলা ভাষার প্রমিত রূপের যথাসম্ভব সর্বাঙ্গীন বিশ্লেষণ ও বর্ণনা। বাংলা ধ্বনির ধ্বনিতাত্ত্বিক বিচার, উচ্চারণের নিয়ম, শব্দ ও পদগঠনের নানা সূত্র ও বৈচিত্র্য, বাক্যপ্রকরণ এবং অর্থ ও প্রয়োগ প্রক্রিয়া। দ্বিতীয় খণ্ডে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে- বাংলা ভাষার ব্যাকরণের বিভিন্ন প্রসঙ্গ। এগুলির মধ্যে রয়েছে : >বাংলা ভাষা ও লিপির বিবর্তনের ইতিহাস, >বিভিন্ন ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার সম্পর্ক, >বাংলা ভাষার ভৌগলিক ও সামাজিক বৈচিত্র্য, >এ ভাষার বিভিন্ন লিখনরীতি এবং >ভাষাতাত্ত্বিক পরিভাষা ইত্যাদি। এ ব্যাকরণের বিভিন্ন প্রসঙ্গ রচনা করেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাকরণবিদ ও বিশেষজ্ঞগণ এবং সেগুলির সমন্বিত ও সংগত রূপ প্রদান করেছেন সম্পাদনা পরিষদ। এ কাজের মধ্য দিয়ে বাঙালি মনীষার বিগত শতবর্ষের ভাষাচিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে।
রফিকুল ইসলাম (১৯৪৩-) চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার কলাকান্দা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রফিকুল ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে লেখাপড়া করেন। ভাষাতত্ত্বে উচ্চতর প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদনা করেন আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়, মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়, মিশিগান-অ্যান আরবর বিশ্ববিদ্যালয় এবং হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টরে। তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর বন্দীশিবিরে নির্যাতিত হন। ১৯৫৮ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও নজরুল গবেষণায় নিয়োজিত রয়েছেন। ‘নজরুল নির্দেশিকা’, ‘ভাষাতত্ত্ব’, ‘নজরুল জীবনী’, ‘শহীদ মিনার’, ‘বাংলা ভাষা আন্দোলন’, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ বছর’, ‘অ্যান ইন্ট্রোডাকশন টু কলোকোয়্যেল বেঙ্গালি’ প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য বই। স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক এবং বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ তিনি আরো অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।