বাংলাদেশ ও ইরান এশিয়া মহাদেশের দুটি আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান করে আছে। দুটি রাষ্ট্রের ভিন্ন অবস্থান, পৃথক জাতিসত্তা ও স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকলেও উভয় রাষ্ট্রই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম অধ্যুষিত জনপদ হিসেবে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ও ঐতিহ্যের অধিকারী। প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি পারস্যের পরিবর্তিত নামই হলো ইরান আর বঙ্গ, বাঙ্গালা, বঙ্গীয় অঞ্চল বা পূর্ব পাকিস্তানের পরিবর্তিত নাম হলো বাংলাদেশ। ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে পারস্যে পাহলভি রাজবংশের (১৯২৫-১৯৭৯ খ্রি.) প্রতিষ্ঠাতা রেজা শাহ পাহলভির (১৮৭৮-১৯৪৪ খ্রি.) শাসনামলে (১৯২৫-১৯৪১ খ্রি.) পারস্যের পরিবর্তে 'ইরান' নামে দেশটির নামকরণ করা হয়। ১৯৭৯ সালে ইসলামি বিপ্লবের বিজয়ের মধ্য দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় নাম হয় 'ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান'। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ; যার রাষ্ট্রীয় নাম 'গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ'। আলোচ্য গ্রন্থে বাঙালি বলতে বাংলাদেশের আর ইরানি বলতে ইরানের জাতিসত্তার ইতিহাস, পরিচয়, ঐতিহ্য ও পারস্পরিক সাদৃশ্য এবং উভয় জাতির মাঝে ঐতিহাসিক গভীরতম সম্পর্ক সংক্রান্ত বিষয়াবলির অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ তুলে ধরা হবে। বাংলাদেশ ও ইরান- এ দুটি দেশের মাঝে অজস্র সাদৃশ্য রয়েছে। তন্মধ্যে সর্বাপেক্ষা উল্লেখ্যযোগ্য সাদৃশ্য হলো, দুটি জাতির মাঝেই এমন দু'জন বিস্ময়কর মহামানবের আবির্ভাব ঘটেছে- যাঁদের জন্য সুদীর্ঘকাল সমগ্র জাতি প্রতীক্ষার প্রহর গুণেছে এবং তাঁদের শুভাগমনে জাতিদ্বয়ের ইতিহাসে নতুন মাত্রা পেয়েছে;