“হযরত রাবেয়া বসরী (র.)" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ অন্যায় অত্যাচার মারামারি-কাটাকাটি আর যৌনচারে যখন ছেয়ে যায় কোন দেশ আর সর্বস্তরের মানুষগুলাে যখন হায়ওন জানােয়ারে রূপান্তরিত হয়। এ জাতির পতন যখন সুনিশ্চিত। ঠিক সেই মুহূর্তে মহান আল্লাহ এই নির্বোধ বান্দাদেরকে নিজের গজব হতে বাঁচিয়ে নিতে সর্বকালে সর্ব জাতিতে প্রেরণ করেছেন মহামানব রূপী নবী রাসূল, গাওস, কুতুব, ওলী আব্দালদেরকে। এদের জন্য টিকে যায় পতন মুখী জাতি ও দেশ। তাই সমকালীন জাতি ও দেশের কাছে এদের গুরুত্ব তুলনাহীন। এদের যােগ্যতা অপরিসীম। এদের মর্যাদা অতুলনীয়। মরুভূমির পৃথিবীর অনুভূতির স্থল বসরা। প্রকৃতির রূপ সন্ধানী মানুষের চোখ ঝলসানাে রূপের অধিকারীনী বসরা। ফুল বিলাসীদের মনমুগ্ধকর গােলাপের দেশ বসরা। পর্যটক আর জ্ঞানী গুণীদের জ্ঞানের আধার বসরা। পীর, দরবেশ আর ওলীদের তীর্থভূমি বসরা। অর্থ লােলুপ বণিকের ঐশ্বর্য মণ্ডিত ধনাগার বসরা। ভােগ বিলাসীর ভােগলালসা চরিতার্থের শ্রেষ্ঠ নগরী এই বসরা। অসহায় আর খেটে খাওয়া। মানুষের নিতান্ত মাথা গুজে দিন যাপনের স্থান এই বসরা। হিজরী দুই শতকের পৃথিবীর মানুষের কাছে ছিল এক শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ স্বরূপ এই বসরা নগরী। সর্বস্তরের মানুষের আশা আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রস্থল এই বসরাবাসীরা যখন স্বার্থপরতা আর অরাজকতার অগ্নিদাহে জ্বলে পুড়ে মানব সভ্যতার ইতিহাস হতে বিলুপ্ত হবার পথে । তখন আল্লাহ্ তার নিজের পছন্দের এ উদ্যানটিকে মানুষের অন্তরে চিরস্থায়ী করার মানসে বসরায় পাঠালেন তার প্রিয় বান্দী রাবেয়াকে। যিনি সৃষ্টি রহস্যের একটি চিহ্ন। অনন্ত প্রেমের জ্যান্ত প্রতীক। ইহকাল আর পরকালের সেতু বন্ধন। আত্ম ত্যাগের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। বিশ্বনবী (সাঃ) এর প্রিয় উম্মত। সত্তুর হাজারের অধিক পাপী উম্মতের ত্রাণকর্তী। যার জন্ম দরিদ্র পিতার গৃহকে করে তােলে সচ্ছল ও স্বাচ্ছন্দের। অখ্যাত পিতাকে করে তােলে সরাসরি পালন কর্তার পরম শ্রদ্ধা ভাজন। বিশ্ব পালক আল্লাহর প্রিয় হাবীব (সাঃ) কুখ্যাত বস্তির এক অখ্যাত দরিদ্রের পর্ণ কুটিরে স্বপ্নযােগে আবির্ভূত হন যার জন্মলগ্নে। স্বয়ং কাবা এগিয়ে আসে যাকে সম্বর্ধনা জানাতে সে রাবেয়ার সম্মানের ব্যাখ্যা সাধারণ মানুষের পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়? এক কথায় শুধু এতটুকু বলা যায় যে তিনি ছিলেন সত্যিকার নারী জীবনের মূর্ত প্রতীক।