ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা মোটকু মামা এতই মোটা যে রিকশাওয়ালারা তাকে রিকশায় তুলতে চান না, আর যদিও বা তিনি রিকশায় ওঠেন, রিকশার চাকা যায় ফেটে। বাসে যখন তিনি বসেন, তাঁর হাঁটু যারা সামনের সিটের সঙ্গে আটকে। এই মোটকু মামা, আর তার ক্লাস সিক্সে পড়া ভাগ্নে অয়ন, অয়নের বন্ধু টুটুল, আর টুটুলের রিনিখালা মিলে বেরুলেন একটা গোয়েন্দা অভিযানে। অয়নের ছোটখালার গাড়ি চুরি হয়ে গেছে, সেই রহস্য উদ্ঘাটন করাই তাদের মিশন। কিন্তু পথে পথে ঘটল কতই না বিপত্তি। শেষে কুকুরের তাড়া খেয়ে মোটকু মামা আটকে গেলেন এক ভাঙা দেয়ালের ফোকরে। সেখান থেকে কিছুতেই তাকে বের করা যাচ্ছে না। সেখান থেকে কিছুতেই তাকে বের করা যাচ্ছে না। টেলিভিশনে সরাসরি প্রচারিত হচ্ছে এই দৃশ্য। কিন্তু আদারতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় দেয়াল ভাঙাও যাচ্ছে না। কী হবে মোটকু মামার? আর এক ভয়ঙ্কর চোরাকারিবারি দলকে ওরা ধরলই বা কী করে? ভূমিকা পদ্য বার বার বলল, বাবা, এইসব কী লেখো? মোটাদের তুমি আঘাত দিচ্ছ কেন? সিরিয়াস বিষয় নিয়ে লেখো, যাতে আমিও পড়তে পারি। পদ্যকে বলি, দেখো, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছুটি গল্প শুরু করলেন বালকদের কৌতুক দিয়ে। দুষ্টুমি দিয়ে। তাই বলে ছুটি কি সিরিয়াস গল্প নয়? আসলে হাসির গল্প লিখতেই যে আমার ভালো লাগে। হাসির মধ্য দিয়ে শুরু করি, তারপর সেটা যদি গুরুতর হয়ে পড়ে, তাহলে তো আমার আর কিছু করার থাকে না। আমার এই গোয়েন্দা গল্পটাও হাসি-তামাসা দিয়ে শুরু, শেষটা? থাক, সেটা আর বলছি না। তোমরা নিজেরা পড়ে নাও। আনিসুল হক
আনিসুল হক, বাংলাদেশে গত শতাব্দীর আশির দশকে আবির্ভূত হওয়া একজন প্রখ্যাত কবি, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, গদ্যকার্টুন, রম্যরচনা, ভ্রমণকাহিনী, শিশুসাহিত্যসহ সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে রয়েছে তার সাবলীল বিচরণ। বর্তমানে বাংলাদেশের জনপ্রিয় দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদক হিসেবে কর্মরত আছেন। আনিসুল হকের জন্ম ১৯৬৫ সালের ৪ মার্চ নীলফামারীতে। শিশু মনোবিজ্ঞানের শিক্ষক বাবার অনুপ্রেরণায় ছোটবেলা থেকেই আগ্রহ জন্মেছিলো লেখালেখি আর ছবি আঁকায়। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাকালীন সাহিত্যজগতে প্রবেশ করেন প্রথম কবিতার বই ‘খোলা চিঠি সুন্দরের কাছে’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে। আনিসুল হক এর বই প্রকাশের কালটি ছিলো উত্তাল স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনের সময়। আনিসুল হক এর বই সমূহ প্রেমের প্রতি পক্ষপাত করলেও একইসাথে সেসময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার চিত্রও ফুটিয়ে তুলেছে। তাঁর অন্যান্য কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘আমি আছি আমার অনলে’, ‘আসলে আয়ুর চেয়ে বড় সাধ তার আকাশ দেখার’, এবং ‘জলরংপদ্য’। মুক্তিযুদ্ধের সত্য ঘটনা নিয়ে লেখা উপন্যাস ‘মা’, আনিসুল হক এর বই সমগ্র এর মধ্যে পাঠকের মনে সবচেয়ে বেশি দাগ কেটেছিল। এছাড়াও ‘বীর প্রতীকের খোঁজে’, ‘নিধুয়া পাথার’, ‘আয়েশামঙ্গল, খেয়া’, ‘ফাঁদ’, ‘বেকারত্বের দিনগুলিতে প্রেম’, ‘ভালোবাসা আমি তোমার জন্য কাঁদছি’, ‘ফাল্গুন রাতের আঁধারে’ তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস। বিভিন্ন স্বনামধন্য পত্রিকার সম্পাদকের ভূমিকা পালন করেছেন দীর্ঘদিন, এখনও লিখে যাচ্ছেন পত্রিকার কলাম। লিখেছেন বেশ কিছু টেলিভিশন নাটক ও সিনেমার চিত্রনাট্যও। কথাসাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বেশ কিছু পুরস্কার পেয়েছেন বাংলা সাহিত্যের আধুনিক এই লেখক।