ফ্ল্যাপে লিখা কথা বাংলা সমালোচনা ও প্রবন্ধ সাহিত্য যে কাঙ্ক্ষিত মানে পৌঁছেনি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সৃজনশীল সাহিত্যের তুলনায় আমাদের মননশীল সাহিত্য অপেক্ষাকৃত ম্লান।
২০০১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় ‘বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষতার ভবিষ্যৎ’ প্রকাশের মধ্য দিয়ে দেশের তরুণতম প্রাবন্ধিক হিসেবে রাজীব সরকারের আত্নপ্রকাশ। শিল্প সাহিত্যের স্মরণীয় স্রষ্টাদের অবদান মূল্যায়নের পাশাপাশি সমাজ সংস্কৃতির নানা দিক নিয়ে আলোচনা ও সাহিত্য সমালোচনা তাকে তরুণ প্রাবন্ধিকদের মধ্যে বিশিষ্ট করে তুলেছে।
‘নিহত রবীন্দ্রনাথ’ রাজীব সরকারের দ্বিতীয় প্রবন্ধ গ্রন্থ । রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু নিয়ে তার আলোচনা অভিনব। দেশ বিদেশের কয়েকজন কীর্তিমান ব্যক্তির জীবনের উজ্জ্বল দিকগুলো অনায়াসে চিহ্নিত করেছেন তিনি। বুদ্ধির মুক্তি আণ্দোলনের প্রাণ পুরুষদের প্রাসঙ্গিকতা যৌক্তিকভাবে তুলে ধরেছেন। বিশ্বায়ন, সংস্কৃতি, শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তার আলোচনা গভীর অভিনিবেশের দাবি রাখে।বাংলা সাহিত্যের কয়েকটি অসামান্য বইয়ের নির্মোহ মূল্যায়ন তার নৈব্যক্তিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক। এই প্রবন্ধ সংকলন একজন মননশীল তরুণের ভাবনার বহুমাত্রিকতার দ্যোতক। চিন্তার বৈচিত্র্যে ও বক্তব্যের নতুনত্বে এই বই আমাদের প্রবন্ধ সাহিত্যে ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।
রাজীব সরকারের জন্ম ১৯৮০ সালে ময়মনসিংহে । তাঁর নিজ জেলা কিশোরগঞ্জ। উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ ও যুক্তরাজ্যের নর্দাম্ব্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক রাজীব সরকার। ১৮তম জাতীয় টেলিভিশন বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল তাঁর নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয় এবং তিনি শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হন। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে পাঠচক্র সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিন বছর। বিভিন্ন দৈনিক ও সাহিত্যপত্রে লেখালেখি করেন। তাঁর প্রকাশিত অন্যান্য গ্রন্থ : বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার ভবিষ্যৎ (২০০১), নিহত রবীন্দ্রনাথ, যুক্তি+ তর্ক = বিতর্ক (২০১২), মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে (২০১৪), সাহিত্যিকের সমাজচেতনা ও অন্যান্য ভাবনা (২০১৫) এবং ইউরোপের পথে পথে (২০১৬)। তিনি এশিয়া, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ার ১৬টি দেশ ভ্রমণ করেছেন। স্ত্রী সুদীপ্তা সরকার। দুই পুত্র সাগ্নিক ও ঋত্বিক।