খুন, ধর্ষণ, দখল, ঝড়, বন্যা, দুর্ভিক্ষ আর বিপন্ন মানুষ-পত্রিকার পাতায় প্রবল সংবাদ। কখনো সিঙ্গেল কলাম,কখনো ডাবল কলাম আবার কখনো ব্যানার। প্রতিদিন পত্রিকার পাতায় মুদ্রিত হয় অসংখ্য খবর। কিন্তু যারা খবরের মানুষ তাদের জীবনের ছবি এই দর্পনের বাইরেই থেকে যায়। সংবাদপত্রের নিজস্ব পৃথিবীকে প্রতিদিন ক্ষত বিক্ষত করে সংঘাত, ষড়যন্ত্র, প্রতিযোগিতা আর কূট কৌশল। একটি পত্রিকার জন্ম হয়। মরে যায় আরেকটি পত্রিকা। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে কিছু মানুষের জয় অথবা পরাজয়ের ইতিহাস।
নিশাত বাঁচাতে চেয়েছিলো দৈনিক প্রবাহকে। লড়াই করতে চেয়েছিলো কিছু মানুষের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে। নিশাতের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলো নাজিম, হিয়া, জামান সাহেব। আরিফ শাহনেওয়াজ প্রবাহকে বন্ধ করে দিয়ে তৈরী করতে চেয়েছিলেন দৈনিক দিনরাত্রির নতুন সাম্রাজ্য। তার পেছনে যুক্ত হয়েছিলো বেনিয়া অর্থ। লড়াইয়ের মাঠে নেমে নিশাত আবিষ্কার করেছিলো মানুষ মূলত একা। বিশ্বাসঘাতকতা, ষড়যন্ত্র মানুষকে একা করে দেয়। একজন ব্যক্তি মানুষ এই একবিংশ শতাব্দীতে প্রবল পরাক্রান্ত পুঁজির সামনে অসহায়।
নিশাতের এই অসম লড়াইয়ের সঙ্গে মিশে যায় রাজনীতির চোরাস্রোত। জড়িয়ে যায় রাজনৈতিক কর্মী মন্টু। মন্টুর ভালোবাসার সূত্রে ধরে লায়লা। তাদের খুব সাধারণ ভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন তছনছ করে দেয় রাজনীতির দানব। স্বপ্ন বিনষ্ট হয় হিয়ার, নাজিমের, নাজমার।
জীবন এভাবেই মানুষকে মিলিতভাবে তার অবিরাম প্রবাহের মধ্যে টেনে নেয়। আবার এই প্রবাহের মধ্যে রেখেই তাকে একা করে দেয়।
জন্ম মার্চ ২৫, ১৯৬৪। লেখালেখির শুরু আশির দশকের শুরুতে। লেখাপড়া শেষ করেছেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন প্রায় তিরিশ বছর । এখন লেখালেখির সঙ্গেই জড়িত। প্রকাশিত গ্রন্থ : ফেলে আসা রুমাল (কাব্যগ্রন্থ), এইসব অন্ধকার (উপন্যাস), পুড়তে থাকো বিজ্ঞাপনের আগুনে (কাব্যগ্রন্থ), যেখান থেকে আকাশ দেখা যায় না। উপন্যাস). কয়েকটি মৃত জোনাকী (গল্পগ্রন্থ), বৃত্তের ভেতরে একা। (উপন্যাস), শীতে ভবঘুরে (কাব্যগ্রন্থ), অভ্যুত্থান (উপন্যাস), চৈত্রের দিন (উপন্যাস), মহাকালের ঘােড়া (উপন্যাস), চে গুয়েভেরার আফ্রিকার ডায়েরি (অনুবাদ)।