(বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিকপদে ভর্তি পরীক্ষার সহায়িকা)
ভূমিকা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ বিশ্বের অন্যতম পেশাদার সেনাবাহিনী হিসেবে স্বীকৃত। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম নেওয়া এই বাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে প্রধান অংশগ্রহণকারী। নিয়মিত সেনাসদস্যদের আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে আমাদের সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করেছে। কিন্তু পরিচর্যা যত উন্নতই হোক না কেন, সঠিক জাতের বীজ যদি নির্বাচন করা না হয়, তাহলে ফলন যেমন কখনোই ভালো হয় না; তেমনি খুব দুর্বল রিক্রুটকে যত উন্নত প্রশিক্ষণই দেওয়া হোক না কেন তাকে আদর্শ পেশাদার সৈনিকে পরিণত করা অসম্ভব। তাই যেকোনো পেশার মতোই সেনাবাহিনীতেও রিক্রুটিং একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সেনাবাহিনী যেকোনো রাষ্ট্রের স্বাধীনতা আর সার্বভৌমত্বের অন্যতম রক্ষাকবচ। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব যখন সংকটে, তখন শ্রেণি-পেশা-নির্বিশেষে সবাই হয়তো একসময় দেশরক্ষার যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে এগিয়ে আসে। কিন্তু পেশাগতভাবে একমাত্র সেনাসদস্যরাই প্রতিনিয়ত মাতৃভূমি রক্ষার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখে এবং যুদ্ধের সময় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত। তাই বিশ্বের সব দেশেই সেনাসদস্যদের আলাদা শ্রদ্ধা আর সম্মানের চোখে দেখা হয়। প্রত্যেক তরুণই স্বপ্ন দেখে তার দেশের সেনাবাহিনীর সৈনিক হওয়ার। আর তাই প্রতিবছর হাজার হাজার তরুণ সেনাবাহিনীতে ভর্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়ে থাকে। কিন্তু সেনাসদস্য হওয়ার জন্য একজন প্রার্থীর ভেতর কিছু বিশেষ মৌলিক বৈশিষ্ট্য থাকা আবশ্যক, আর রিক্রুটারদের কাজই হলো হাজার প্রার্থীর ভিড়ে সেই বিশেষ মৌলিক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন প্রার্থীকে খুঁজে বের করা।
সঙ্গতকারণেই সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে ভর্তির পরীক্ষা অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। এজাতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রার্থীদের পরিকল্পিত প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। এমন প্রস্তুতির জন্য উপযুক্ত সহায়িকার গুরুত্বও অপরিসীম। যেমন— বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য আছে বিসিএস ভর্তি গাইড, আবার কমিশন্ড অফিসারদের জন্য আছে আইএসএসবি গাইড। কিন্তু বাংলাদেশে সৈনিক পদে ভর্তির জন্য কোনো গাইড বা সহায়িকা এখনো আমার চোখে পড়েনি। তাই এমন একটি বইয়ের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন যাবৎ অনুভূত হয়ে আসছে।
আমি মেজর দেলোয়ারকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই এই প্রয়োজনীয়তাটা অনুভব করে এমন একটা বই লেখার অভিনব উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। আমি নিশ্চিত ইতোপূর্বে তার প্রকাশিত ‘আধুনিক দৃষ্টিকোণে সানজুর দ্য আর্ট অব ওয়ার’-এর মতো তার এই উদ্যোগটিও আরেকটি ‘মাইল স্টোন’ হিসেবে স্বীকৃত হবে এবং এই উদ্যোগের কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক হতে আগ্রহী অসংখ্য চাকরিপ্রার্থী তরুণ দারুণভাবে উপকৃত হবে। পরিশেষে আমি বইটির লেখক এবং এর পাঠকদের জন্য জানাই আন্তরিক শুভকামনা।
ধন্যবাদান্তে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. তোফায়েল আহমেদ, পিএসসি গুইমারা, খাগড়াছড়ি।
Title
তোমাকেই খুঁজছে সেনাবাহিনী (বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিকপদে ভর্তি পরীক্ষার সহায়িকা)
পেশায় একজন সেনাসদস্য, তবে নেশায় একজন লেখক- ডেল এইচ খান সম্পর্কে এই বাক্যটি অত্যুক্তি হবে না। নিজের পেশাজীবনকে লেখালেখির সাথে যুক্ত করবার অন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। তাঁর লেখা বই ‘আধুনিক দৃষ্টিকোণে সানজুর দ্য আর্ট অব ওয়্যার’ বইটির জন্য তিনি অর্জন করেছেন সেনাপারদর্শিতা পদক। অনলাইনে সিভি লেখার খুঁটিনাটির মতো ব্যবহারিক জ্ঞান নিয়েও পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া, একজন অভিজ্ঞ সেনাসদস্য হবার দরুন তিনি সেনাবাহিনীতে ভর্তিচ্ছুদের জন্য একটি ভর্তি সহায়ক বই ‘তোমাকেই খুঁজছে সেনাবাহিনী’ লিখেছেন, যা কি না বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে ভর্তি পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। প্রকৃত নাম মোঃ দেলোয়ার হোসেন হলেও পাঠকসমাজের কাছে তিনি ডেল এইচ খান নামেই সুপরিচিত। ১৯৭৯ সালের ২৯শে নভেম্বর ঢাকা জেলায় জন্ম নেন ডেল এইচ খান। মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ডেল এইচ খান) এর বই সমূহ মূলত ইতিহাসের বিভিন্ন বিখ্যাত যুদ্ধ, রণকৌশল, যোদ্ধাদের জীবনকাহিনী ইত্যাদিকে ঘিরেই রচিত হয়। ব্যক্তিগত পছন্দের জায়গা থেকেই বইয়ের বিষয় নির্ধারণ করেন তিনি। মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ডেল এইচ খান) এর বই সমগ্র বর্তমান সময়ের প্রাসঙ্গিকতাকেও নির্দেশ করে, এক্ষেত্রে তাঁর ‘রোহিঙ্গা রঙ্গ’ বইটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস ও ভবিষ্যত, উভয় সময়ের বাস্তবতাকে নিয়েই বইটি রচনা করেছেন তিনি। তাঁর বইগুলো অনেক বেশি বিশ্লেষণাত্মক; বাস্তব তথ্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে তিনি বিশ্লেষিত গ্রন্থ উপহার দেন পাঠকদের, বর্তমানে বিশেষ ঘরানার পাঠক জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর লেখনীর জন্য।