“শায়খুল আকবর মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবীর : ওয়াহদাতুল ওজুদের রহস্যভেদ" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ বিশ্বের প্রখ্যাত সুফি ও তত্ত্বজ্ঞানের আলােড়ন সৃষ্টিকারী দার্শনিক মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবীর ‘ওয়াহদাতুল ওজুদ' সত্তার একত্ব, ঐক্য ও সর্বময়তার ধারণা সমগ্র বিশ্বে আলােচনার ঝড় তােলে। তিনি কোরআনের সারবস্তুর ব্যাখ্যায় ‘ওয়াহদাতুল ওজুদের স্বরূপ ও প্রকৃতির চমকপ্রদ তত্ত্ব প্রদান করেছেন। তাঁর সুবিন্যস্ত বর্ণনায় সুরা কাসাসের ৮৮নং আয়াতে কারিমের উল্লেখ রয়েছে : কুলু শাইয়িন হালিকুন ইল্লা অজহাহু । অর্থ: যাবতীয় কিছুই ধ্বংসশীল, তাঁর সত্তা ব্যতীত। এখানে বলা হয়েছে যে একমাত্র আল্লাহপাক ব্যতীত কোন সত্তারই অস্তিত্ব নেই। তাহলে ইবনুল আরাবীর তত্ত্ব ও সুফিগুরু রুমির তত্ত্বে কোন পার্থক্য নেই। আবার রুমি মসনবিতে মানবসত্তা ও পরমসত্তাকে অভিন্ন সূত্রে একীভূত করে নিজস্ব মত প্রকাশ করেছেন। তাঁর এ মতও ‘ওয়াহদাতুল ওজুদের’ ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত। তিনি মসনবির প্রথম খণ্ডের শুরুতেই বয়েতগুলাে ব্যক্ত করেছেন : জুমলা মাশুকাস্ত আস্ত আশেক পর্দায়ি জিন্দা মাশুকান্ত আস্ত আশেক মুদায়ি। অর্থ: ‘জগতের সব কিছুই প্রেমাস্পদ এবং প্রেমিক আবরণ ও প্রপঞ্চ মাত্র। প্রেমাস্পদই জীবিত, আর প্রেমিক মৃত। ইবনুল আরাবীর ‘ওয়াহদাতুল ওজুদের তত্ত্ব জগদ্বাসীর সামনে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ও বাগ্মীতার সাথে উপস্থাপিত হয়েছে। রুমিও মসনবির দ্বিতীয় পর্বে ‘ওয়াহদাতুল ওজুদ মতবাদের সঠিক ও তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। রুমির অদ্বৈতবাদ, হামাউস্ত বা ‘ওয়াহদাতুল ওজুদ শায়খুল আকবরের সত্তার একত্বের ধারণাই প্রদান করে। এ গ্রন্থে এমন গুপ্ত সুপ্ত জ্ঞানের আলােচনা রয়েছে যা পাঠকের অন্তরে গভীর উপলব্ধি জাগাতে সহায়ক হবে।
সৈয়দ মোস্তাক আহ্মাদের জন্ম ১৯৮২ সালের ১ জানুয়ারি রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর গ্রামে। তার পিতা মাওলানা মুহাম্মদ তমিজ উদ্দীন (র.) ছিলেন একজন পীর ও আধ্যাত্মিক পুরুষ। তার মাতা মনোয়ারা বেগমও ছিলেন সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আগত। এরকম সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান মোস্তাক আহ্মাদ এর ভাগ্য যেন নির্ধারিতই ছিল যে তিনি বড় হয়ে ধর্ম ও সুফি দর্শন নিয়ে লিখবেন। পারিবারিক ঐতিহ্যের কল্যাণে শৈশব থেকে তার ধর্মীয় শিক্ষার ভিত মজবুত হয়। পাশাপাশি সুফি দর্শন, মরমী দর্শন, আধ্যাত্মিকতা ইত্যাদি বিষয়েও পারিবারিকভাবে শিক্ষা লাভ করেন। তাই তো মোস্তাক আহ্মাদ এর বই সমূহ আধ্যাত্মিকতা ও দর্শন থেকে শুরু করে ধর্মীয় ইতিহাস, অনুশাসন, আত্মোন্নয়ন, মানবজীবন ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান ও অনুপ্রেরণার অফুরন্ত উৎস। মোস্তাক আহমাদ একজন দক্ষ মোটিভেটর। মেডিটেশন ও নানাবিধ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন এবং ব্যক্তিগত উন্নয়ন সাধন করতে সক্ষম। বর্তমানে ‘ড্রিমওয়ে ইলেকট্রনিক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিঃ’ এর ড্রিমওয়ে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তথা সিইও হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি। মানবোন্নয়ন, ব্যক্তিক উৎকর্ষ সাধন, সুফি ও মরমী দর্শন নিয়ে দেড় শতাধিক পাঠকপ্রিয় বই লিখেছেন তিনি। মোস্তাক আহমাদ এর বই সমগ্র ব্যক্তিজীবনে সমৃদ্ধি ও সাফল্যের চূড়ায় আরোহণের প্রেরণা দেয়, ব্যক্তিমনের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের পথ দেখায়, সাফল্যের আকাঙ্ক্ষা ও ক্ষুধা জাগ্রত করে। ‘দ্য ম্যাজিক অব থিংকিং বিগ’, ‘বুদ্ধি ও বিনিয়োগ শেয়ার ব্যবসায় সেরা সাফল্য’, ‘মেধা বিকাশের সহজ উপায়’, ‘ইতিবাচক চিন্তার শক্তি’, ‘বিজনেস স্কুল’, ‘মাওলানা রুমীর আত্মদর্শন’, ‘লালন সমগ্র’, ‘টাকা ধরার কৌশল’, ‘দিওয়ান-ই-হাফিজ’, ‘দিওয়ান-ই-শামস তাবরিজ’, ‘আত্মোন্নয়ন ও মেডিটেশন’ ইত্যাদি তার কিছু জনপ্রিয় বই।