"কিং সলোমন্স মাইন্স মুন অব ইজরায়েল"বইটির শেষের ফ্লাপের কিছু কথা: আফ্রিকার ঘন অরন্যের গাইড, নাম তার আলান কোয়াটারমান। নামকরা ও পাকা শিকারী আলান কোয়াটারমান, সে জানে এ ঘন অরন্যের আধ্যপান্ত। শুধু জানেনা কালুয়ানা ছাড়িয়ে কতাে হাজার মাইল দূরে রাজা সলােমনের হিরের খনির সন্ধান? অপরদিকে আলানের কাছে আসেন, এ হিরের খনির সন্ধানে বের হওয়া ব্রিটেনের হেনরি কার্টিসের স্ত্রী, রুপসী এলিজাবেথ কার্টিস। তাঁর স্বামীর খোঁজে তাদের গাইড হতে আলান কোয়াটারমান’কে রাজি করান মােটা টাকার বিনিময়ে রাজা সলােমনের দেশে যাওয়ার জন্য। আলানও শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে যান গুড ও মিসেস কার্টিসের সাথে যেতে সােনার খনির রহস্য এবং কার্টিসের সন্ধানে। পথে বহু মরণপণ বাধা ও শত বিপত্তি পেরিয়ে অবশেষে একদিন ঠিকই তারা পৌঁছলেন রাজা সলােমনের দেশে, কিন্তু সেখান থেকে কী তারা শেষ পর্যন্ত জীবিত ফিরে আসতে পেরেছেন? ইজরায়েলি অনিন্দ্য সুন্দরী মেরাপি, যাকে সবাই বলে, ‘মুন অব ইজরায়েল’ অথাৎ ইজরায়েলের চাদ। এই সুন্দরী মেরাপি নানা ঘটনায় জরিয়ে যায় মিশরের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী ফারাও যুবরাজ শেঠির প্রণয়ে। রাজ পরিবারের অমতে গিয়ে বিয়ে করেন। যুবরাজ শেঠি এই মেরাপিকে। অপরদিকে মিশরে বসবাসরত ইজরায়েলবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার। কিন্তু মিশর ফারাও আমেনমেসিস তাদেরকে ফিরে যেতে না দেওয়ায় তারা মিশরকে অভিশাপ দিল। সে অভিশাপে শুকিয়ে যেতে লাগল মিশরের নীলনদের পানি। পানির পরিবর্তে নীলনদে দেখা দিল রক্তের স্রোত ও মিশরে দেখা দিল চরম দূর্ভিক্ষ। এমন পরিস্থিতিতেও ফারাও আমেনমেসিস তার সিন্ধান্তে অটল, ফিরে যেতে দিবেন না ইজরায়েলদের। তাহলে কী হবে যুবরাজ শেঠি’র? কী করবে এমন দূর্দিনে ইজরায়েলিদের জন্য মেরাপি? এ সব প্রশ্নেরই জবাব পাবেন জনপ্রিয় লেখক স্যার ‘হেনরী রাইডার হ্যাগার্ড’ এর ‘মুন অব ইজরায়েল’এ?
ভাইয়ের সাথে বাজি ধরে অ্যাডভেঞ্চার কাহিনী লেখা শুরু করার পর যিনি শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম সেরা দুঃসাহসিক ও রোমাঞ্চকর গল্পের স্রষ্টা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন তিনি হলেন স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড। কম বয়সে চাকরিসূত্রে তিনি আফ্রিকা চলে যান এবং সে অঞ্চলের নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ান, যার ফলে আফ্রিকা মহাদেশের নানা জানা-অজানা বিষয় সম্পর্কে তিনি প্রচুর জ্ঞান অর্জন করেন এবং এই জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা পরবর্তীতে ব্যবহার করেন তার রোমাঞ্চকর অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস ও গল্পসমূহ রচনায়। দশ ভাই-বোনের মধ্যে অষ্টম হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড জন্মগ্রহণ করেন ১৮৫৬ সালের ২২ জুন, ইংল্যান্ডের নরফোকে। খুব অল্প বয়সেই কর্মজীবন শুরু হয়ে যায় পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে। মাত্র উনিশ বছর বয়সেই তাঁকে চাকরিসূত্রে পাড়ি জমাতে হয় আফ্রিকায়। সেখান থেকে ৬ বছর পর ফিরে এসে তিনি আইনশাস্ত্রে পড়াশোনা শুরুর পাশাপাশি সাহিত্যে মনোনিবেশ করেন এবং তাঁর জাদুকরী লেখনীর মাধ্যমে সৃষ্টি হতে থাকে 'সলোমন'স মাইনস্', 'শী', 'অ্যালান কোয়াটারমেইন' এর মতো অমর সকল দুঃসাহসিক ও রোমাঞ্চকর কাহিনীর। হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড এর বই সমূহ যুগে যুগে অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পাঠকদের দিয়ে গিয়েছে নানা বিচিত্র কল্পকাহিনীর এক অনন্য অভিজ্ঞতা, যার মূলে রয়েছে 'আমস্লোপোগাস', 'রিলিজিয়ন', 'অ্যালান কোয়াটারমেইন', 'শী' ইত্যাদি বিখ্যাত সিরিজ। হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড এর বই সমগ্র এর মধ্যে 'ক্লিওপেট্রা', 'মন্টেজুমা'স ডটার', 'লিসবেথ', 'কুইন অফ দ্য ডন', 'ভার্জিন অফ দ্য সান', 'দ্য ঘোস্ট কিংস', 'মেরি', 'দ্য ট্রেজার অফ দ্য লেক', 'রেড ইভ' ইত্যাদিও উল্লেখযোগ্য। তাঁর বেশ কিছু বই বাংলাদেশি পাঠকদের সুবিধার জন্য অনূদিত হয়েছে বাংলা ভাষায়। বাংলা ভাষায় অনূদিত হেনরি রাইডার হ্যগার্ড এর অনুবাদ বই এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো 'শী', 'রিটার্ন অফ শী', 'দ্য ইয়েলো গড', 'দ্য ঘোস্ট কিংস', 'কিং সলোমন'স মাইনস', 'মন্টেজুমা'স ডটার', 'অ্যালান অ্যান্ড দ্য হোলি ফ্লাওয়ার', 'মার্গারেট', 'দ্য পিপল অফ দ্য মিস্ট' ইত্যাদি। এই খ্যাতিমান কাহিনীকার ১৯২৫ সালের ১৪ মে ৬৮ বছর বয়সে ইংল্যান্ডের লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেন। এর পূর্বে তিনি ১৯১২ সালে ইংরেজ রাজপরিবারের পক্ষ থেকে 'নাইটহুড' উপাধি লাভ করেন।