"বিশ্বত্রাস চেঙ্গিস খান" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: মােঙ্গল নেতা চেঙ্গিস খান ১১৬২ খ্রিস্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেন। তার আদি নাম ছিল তেমুজিন। তের বছর বয়সে পিতার মৃত্যু হলে চেঙ্গিস নানা দুঃখ দুর্দশার মধ্য দিয়ে কিছুকাল অতিবাহিত করেন। কিন্তু কৈশােরে কঠোর জীবন যাপন করার ফলে তিনি স্বভাবতই নির্ভীক, ধৈর্যশালী ও আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠেন। ঐ সময়ে মােঙ্গল জাতি কতকগুলি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলে বিভক্ত ছিল। মােঙ্গল' কথাটি ‘মাঙ' অর্থাৎ নির্ভীক শব্দ থেকে এসেছে। বস্তুত মােঙ্গলগণ যেমন দুর্ধর্ষ তেমনি নির্ভীক। মানুষের জীবনের প্রতি তাদের বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা ছিল না। নির্দোষ নরনারীকে হত্যা করতে মােঙ্গলদের বাধত না। চেঙ্গিস খান এই দুর্ধর্ষ মােঙ্গল জাতির বিভিন্ন দলকে ঐক্যবদ্ধ করতে সমর্থ হন। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি এই ঐক্যবদ্ধ জাতির খান অর্থাৎ নেতা উপাধি গ্রহণ করেন। দুর্দমনীয় শক্তি নিয়ে চেঙ্গিসের নেতৃত্বে মােঙ্গল জাতি চীন, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার সকল দেশ বিধ্বস্ত করে। বখ, বােখরা, সমরখন্দ এবং আরও বহু সুন্দর সুন্দর নগর চেঙ্গিসের আক্রমণে ধূলিসাৎ হয়ে যায়। খাওয়ারিজম শাহ জালালউদ্দিন চেঙ্গিস খানের আক্রমণ থেকে আত্মরক্ষার জন্য নিজ রাজ্য থেকে পালিয়ে এসে সিন্ধুদেশে উপস্থিত হলে চেঙ্গিস খান তাঁর পশ্চাদ্ধাবন করে সিন্ধু উপত্যকায় উপস্থিত হয়েছিলেন। জালালউদ্দিন ভারতবর্ষ ত্যাগ করলে এবং ভারতবর্ষের গ্রীষ্মের উত্তাপ অসহ্য বলে চেঙ্গিস খান ভারতবর্ষ আক্রমণ না করেই চলে যান বটে, কিন্তু পরবর্তীকালের মােঙ্গল আক্রমণের সূত্রপাত। তিনিই করে গিয়েছিলেন ‘বিশ্বত্রাস চেঙ্গিস খান’ ইতিহাসাশ্রিত উপাখ্যান।