উনিশ বছর, জীবনের দৈর্ঘ্যে খুব স্বল্প একটা সময়, অভিজ্ঞতাহীন স্বপ্নালু মুহূর্ত মাত্র। জীবনের বহু রঙই তখন পর্যন্ত থেকে যায় অনুপস্থিত। জীবনকে প্রতি মুহূর্তে সামনে দেখে দেখে একজন পরিণত মানুষ যে, নিজস্ব অভিজ্ঞতাজাত জ্ঞান লাভ করে, সেই জ্ঞান অনুপস্থিত থাকে একজন উনিশ বছরের। ফলে, জীবনকে সে যে চোখে দেখছে, সেখানে ভ্রান্তি থাকতে পারে, থাকতে পারে অনিশ্চয়তা, থাকতে পারে ভাবালুতা । প্রীতির ক্ষেত্রে এর কোনােটাই হয়নি । খুব নির্মোহভাবে নিজের জীবনকে উপস্থাপন করেছে সে। বাড়িয়েও বলেনি নিজের সম্পর্কে কিছু, আবার বিনয়ী হতে গিয়ে অস্বীকারও করেনি নিজেকে কোথাও। তার জীবনী পাঠ করতে গিয়ে অপরিণত বয়স্ক কেউ বলে মনে হবে না তাকে, আবার হঁচড়ে পাকাও ভাবার অবকাশ থাকবে না কোনাে। প্রীতি তার বয়সজনিত অভিজ্ঞতার ঘাটতিকে পুষিয়ে দিয়েছে বিপুল পরিমাণে বই পড়ে। তার বয়েসী একটা মেয়ে যে অবিশ্বাস্য পরিমাণে বই পড়েছে, সেটা ভাবলেই বিস্ময়ে হতবাক হতে হয় । বিস্ময় শুধু তার বই পড়াতেই নয়, তার নানামুখী প্রতিভা এবং সৃষ্টিশীলতাতেও বিরাজমান। এই বয়সে সে এক গাদা পুরস্কার পেয়ে বসে আছে নানা প্রতিষ্ঠান থেকে নানা প্রতিযােগিতায় জিতে। প্রতিযােগিতায় অংশ নেবার গভীর আগ্রহও তার মধ্যে আছে বলেই মনে হয় । নিজেকে যাচাই করে দেখার, নিজেকে আরাে ক্ষুরধার করার একটা প্রচেষ্টা হয়তাে তার এটা। প্রীতি ব্রান্ড এম্বাসেডর হিসাবে কাজ করছে মাইক্রোসফটের সাথে । মুহাম্মদ জাফর ইকবাল তাকে ডাকেন চাইল্ড প্রডিজি নামে । মুহাম্মদ জাফর ইকবাল যাকে এই সম্মাননা দেন, তার প্রতিভা সম্পর্কে অন্য কারাে সন্দেহ থাকার আর কোনাে অবকাশই থাকে না। আমারও নেই। এই মেয়েটা খুব অল্প দিনের মধ্যেই তার বিপুল প্রতিভা দিয়ে, তার অসীম সৃষ্টিশীলতা দিয়ে বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যের কেন্দ্রবিন্দুতে রানির আসনে বসবে, সেই ভবিষ্যতবাণী এখনই আমি করে দিতে পারি। আমার গলা কাঁপবে না একটুও। যে দ্রুতলয়ে প্রীতি এগিয়ে যাচ্ছে জীবনস্রোতে ভেসে সত্ৰ সন্ধানে, সেই গতি অব্যাহত থাকুক, এই শুভ কামনা রইলাে। ফরিদ আহমেদ টরন্টো, ক্যানাডা।