"এবং আবৃত্তির কবিতা" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ‘এবং আবত্তির কবিতা’ শুধুই আবৃত্তিকারদের বই নয়। যাঁরা কবিতা ভালােবাসেন তাদের কাছে এই বই আদর ভালােবাসার বই। এই বইয়ের কবিতা ও আবৃত্তিপ্রযােজনার পাণ্ডুলিপিগুলাে শতাধিক বই এবং ওয়েব পেইজ থেকে সংগ্রহীত। কবি ও কবিতার মান বিচার করে এবং আবৃত্তির কবিতার সকল কবিতা সংকলিত হয়েছে বলে দাবি করব না। আমি কিছু কবিতা জানি এবং শতাধিক কবিকে চিনি। অনেক সময় চেনামুখের কথা শুনতে খুব ভালাে না লাগলেও তাকে দেখতে পেলে ভালাে লাগে; স্বজন থাকলে প্রীতিও থাকে। আমার নিকটতম অল্প কজন কবির প্রতি বিশেষ প্রীতি আছে; সেই প্রীতির জন্যেও হয়তাে তাদের কয়েকটি কবিতা এই বইয়ে নিয়েছি- যে প্রতিভার আমার জন্য আনন্দের তা যদি কারাে কাছে কিঞ্চিৎ বিরক্তিকর হয়ে ওঠে সেজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। এই সংকলনের বাইরে আরাে অগণিত অনন্য অনবদ্য কবিতা আছে; আছেন অসংখ্য প্রতিনিধিত্বশীল কবি। কিন্তু এক মলাটে সবটুকু ভালাে জমা করা কারাে পক্ষেই সহজসাধ্য কাজ নয়। কোনাে সংকলন গ্রন্থই সম্পূর্ণ নয়। এই সংকলনটিও অসম্পূর্ণ; কিন্তু আবৃত্তিকার ও পাঠকের জন্য এই বই হাতের কাছে ভরা পানীয়-জলপাত্র-তুল্য। যাদের কবিতা পড়বার অভ্যাস নেই তারাও এবং আবৃত্তির কবিতা’র পৃষ্ঠা উল্টে পাল্টে দেখতে গেলেই আটকে যাবেন; কবিতার সঙ্গে তাঁদের মিতালি হবে বলেই আমার বিশ্বাস।
রবিশঙ্কর মৈত্রীর জন্ম ১৯৬৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। বাবা ঋত্বিক কুমুদরঞ্জন, মা জয়ন্তী দেবী । পৈত্রিকনিবাস ফরিদপুর জেলার মধুখালি উপজেলার নরকোণা গ্রামে। শৈশব থেকেই লেখালেখি শুরু। প্রথম কবিতা লেখা এবং সম্পাদনা দেয়াল পত্রিকায় প্রথম প্রকাশ, মাসিক সন্দীপনা পত্রিকায়, এরপর জাতীয় দৈনিক ও সাপ্তাহিকে ছােটোগল্প প্রবন্ধ প্রকাশিত। প্রথম উপন্যাস জলগুহ, প্রকাশিত হয় ১৯৯৫ সালে, তারপর থেকে প্রতি বছরই রবিশঙ্কর মৈত্রী বই। প্রকাশিত হচ্ছে এ যাবত তাঁর পঞ্চাশটি বই প্রকাশিত। রবিশঙ্কর মৈত্রী দেশহারা হলেও এক অবিচল। জীবনযােদ্ধা তিনি মরমী ভাবের মানুষ। মরমী ভাব বিতরণের মধ্য দিয়ে শুদ্ধ সত্য সুন্দর মানুষের সম্মিলন রচনাই তার ব্রত। রবিশঙ্কর মৈত্রী আবৃত্তি করেন। আবৃত্তির প্রশিক্ষক। তিনি সাংগঠনিক আবৃত্তিচর্চা করছেন ১৯৯৩ থেকে, আবৃত্তি প্রশিক্ষণের জন্য রবিশঙ্কর মৈত্রী ঘুরেছেন বহুস্থানে বহুবার। বাংলাভাষা ও সাহিত্যের শুদ্ধ চর্চার জন্য তিনি নিরন্তর কাজ করেছেন। আবৃত্তিচর্চার ভেতর দিয়ে নতুন প্রজন্মকে মূল্যবােধসম্পন্ন করার চেষ্টা করেছেন রবি। তাঁর আবৃত্তি কবিতাপ্রেমীদের কাছে আদৃত। সাহিত্য সংস্কৃতিচর্চার পাশাপাশি রবিশঙ্কর মৈত্রী ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি টেলিভিশনের জন্য শতাধিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেছেন। ফাদার মারিনাে রিগন : ভেনিস টু। সুন্দরবন প্রামাণ্যচিত্রটি দেশে ও বিদেশে প্রশংসিত। রবিশঙ্কর মৈত্রী এখন ফরাসি দেশবাসী।