‘কাছে থেকে দেখা (১৯৭৩-১৯৭৫)’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ মেজর জেনারেল এম খলিলুর রহমান ১৯৭১-এ পাকিস্তানে বন্দি ছিলেন। সেখান থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশে ফিরে আসেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে বিডিআর (বর্তমানে যার নাম বিজিবি)-এর মহাপরিচালক নিযুক্ত করেন। দায়িত্ব নিয়ে তিনি বিডিআরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হন এবং সীমান্তে চোরাচালান দমনে বিশেষ উদ্যোগ নেন। ছাত্রজীবনে বঙ্গবন্ধু এবং জেনারেল খলিল কলকাতার বেকার হোস্টেলে থাকতেন। সে সুবাদে দুজনের মধ্যে সদ্ভাব ছিল। ১৯৭৩-১৯৭৫ সময় পরিসরে জেনারেল খলিলকে দাপ্তরিক প্রয়োজনে যেমন বঙ্গবন্ধুর কাছে যেতে হতো, তেমনি বঙ্গবন্ধুও মাঝে মাঝে তাঁকে ডেকে কথা বলতেন। জেনারেল খলিল ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু-হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত সময়ের স্মৃতিচারণ করেছেন এই বইয়ে। এতে সেনাবাহিনীতে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকিস্তান প্রত্যাগত অমুক্তিযোদ্ধা দ্বন্দ্ব, তৎকালীন প্রশাসনের অবস্থা, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সফলতা-ব্যর্থতা, বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্ব, একক দল বাকশাল গঠন—এ বিষয়গুলো নিয়ে তিনি লিখেছেন এবং তাঁর মতামত দিয়েছেন। সদ্য স্বাধীনতা প্রাপ্ত বাংলাদেশে পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটনাবলী সম্পর্কে জেনারেল খলিলের এই স্মৃতিচারণা সাধারণ পাঠক এবং ইতিহাসের ছাত্র-শিক্ষক সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করবে।
জন্ম ১৯২৭ সালে বর্তমান জামালপুর জেলার নান্দিনায়। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যােগ দেন ১৯৪৮ সালে । উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন ক্যাম্বারলির বিখ্যাত ব্রিটিশ স্টাফ কলেজে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে নানা পদে কৃতিত্বের পরিচয় দেন। ১৯৭১ সালে রাওয়ালপিণ্ডিতে আর্মি সদর দপ্তরে কর্মরত থাকাকালীন প্রথমে তাকে দাপ্তরিক কাজ থেকে সরিয়ে রাখা হয়, পরে আটক করা হয় বন্দীশিবিরে। ১৯৭৩ সালের ডিসেম্বরে দেশে ফিরে এলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে বিডিআর (বর্তমান বিজিপি)-এর মহাপরিচালক নিযুক্ত করেন। তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন ১৯৭৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। পাকিস্তানে বন্দীজীবনের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা তাঁর পূর্বাপর ১৯৭১ : পাকিস্তানি সেনা-গহ্বর থেকে দেখা বইটি ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় । ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।