"বঙ্গবন্ধুর জীবনে স্মরণীয় ঘটনা" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ তিনি এমন একজন ব্যক্তি, এমন একজন কাণ্ডারি, এমন একজন মুক্তির দিশারী, এমন একজন অবিসংবাদী। নেতা-এ রকম এন্তার অভিধা যার নামের আগে-পরে যুক্ত করা যায় অনায়াসে, যার জন্ম মানেই স্বাধীন বাংলাদেশের। জন্ম, যার কথায় জীবন দিতে কেউ কুণ্ঠাবােধ করত না, তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাঙালি জাতির মুক্তির। দূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যাকে নিয়ে চর্চা হয় দেশবিদেশের নানা মাধ্যমে। লেখা হয় তার জীবনী নিয়ে নানা গ্রন্থ। 'বঙ্গবন্ধুর জীবনে স্মরণীয় ঘটনা’ এমনই একটি গ্রন্থ। এ গ্রন্থের রচয়িতা আগরতলার স্বনামধন্য লেখক ড. দেব্রত দেবরায়। যিনি বঙ্গবন্ধুকে চর্চা করছেন দীর্ঘদিন ধরে। গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা ঘটনাপঞ্জির ধারাক্রম সত্যিই বিস্ময়জাগানিয়া। কেন? কারণ, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক গ্রন্থ বের হলেও সেগুলােতে এমন জীবনপঞ্জি মেলে না। অন্তত। আমার পড়া গ্রন্থগুলােতে তার শূন্যতা অনুভব করেছি ঢের। হয়তাে বিচ্ছিন্নভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবনী উঠে এসেছে নানা লেখায়। কিন্তু এমন যূথবদ্ধ ধারাক্রম এই প্রথম পাঠ করলাম বলে মনে হয়েছে। গ্রন্থটিতে বঙ্গবন্ধুর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবন-সংগ্রামের নানা বাক-বদল, রাজনৈতিক এবং পারিবারিক জীবনের খণ্ড খণ্ড চিত্র উঠে এসেছে অত্যন্ত সাবলীল ভাষায়। যা পাঠে জানা যায় বঙ্গবন্ধুর জীবন-দর্শন কী ছিল। এ পাঠে কোথাও অতিরঞ্জিতের আভাস মেলে না। এ বিষয়ে লেখক যে সদাসচেতন ছিলেন পাঠসূত্রে তার সাক্ষ্য মেলে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যাদের কৌতুহলের শেষ নেই, 'বঙ্গবন্ধুর জীবনে স্মরণীয় ঘটনা’ গ্রন্থটি তাদের সে তিয়াস মেটাবে এ হলফ করে বলা যায়। নেতা আসে, নেতা যায়, কিন্তু সব নেতাই যে আপামর জনতার হৃদয়ে আসন গাড়তে পারেন না, তার জন্য যে নিঃস্বার্থ হতে হয়, জলাঞ্জলি দিতে হয় ব্যক্তিগত ভােগ-বিলাসকে, দেশ ও দশের জন্য দূরদর্শী ভাবনায় ঝুঁদ হতে হয়-এ গ্রন্থ পাঠে সে বিষয়টিও পাঠকের মানসলােকে। প্রভাব বিস্তার করবে বলে আশা করছি। বঙ্গবন্ধুর জীবন-দর্শন হােক বাঙালি জাতির পথনির্দেশ, তাঁর আদর্শে গড়ে উঠুক সােনার বাংলা, দূর হােক সব অনিয়ম আর বাধার প্রাচীর কায়মনে এমন প্রার্থনাই রইল বিধাতার কাছে। -ঝন্টু চৌধুরী।