"মহানবীর (সা.) চিকিৎসা পদ্ধতি" বইয়ের সংক্ষিপ্ত লেখা: মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে ইসলামে। মহাগ্রন্থ পবিত্র কোরআনে ও রাসূল (সা:) এর হাদীসে চিকিৎসা সম্পর্কে বিশদ আলােচিত হয়েছে। এক সময় তিব্বে নবী অর্থাৎ ইসলামি বিধান মতে যাবতীয় রােগব্যাধির চিকিৎসা করা হত। ইসলামি বিধান মতে চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত কল্যাণকামী। যা সর্বত্রই সমাদৃত হচ্ছে ও ভবিষ্যতেও সমাদৃত হবে। কালের বিবর্তনে এ ধরনের চিকিৎসা আজ তেমনভাবে চর্চা হচ্ছে না। ভারত উপমহাদেশে মুসলিম শাসনামলে ইসলামি বিধান মতে মানবদেহের বিভিন্ন রােগের চিকিৎসা করা হত। তখন এ ধরনের চিকিৎসাই ভারতবর্ষের সর্বত্র প্রচলিত ছিল। পরবর্তীতে ব্রিটিশ উপনিবেশিক আমলে ধীরে ধীরে এ ধরনের চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রচন্ডভাবে বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় ইসলামি মতে রােগ ও রােগীর চিকিৎসা পদ্ধতি সমুজ্জ্বল হতে পারছে না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সকল শাখাতাে বটেই শল্য চিকিৎসাবিদ্যায় মহানবীর (সা:) অসংখ্য হাদীস রয়েছে। জ্ঞানগর্ভ গবেষণার অভাবে মহান আল্লাহর বাণী পবিত্র মহাগ্রন্থ কোরআন ও মহানবী হজরত মােহাম্মদ (সা:) এর চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কিত হাদীসসমূহ অনুসরণ করে চিকিৎসা গ্রহণ করে মানবজাতি উপকৃত হতে পারছে না। পবিত্র ইসলামের আলােকে রােগব্যাধির চিকিৎসা করা হলে মানবজাতির বৃহত্তর কল্যাণ সাধিত হবে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। প্রতিভাবান ভেষজ বিজ্ঞানীগণ কোরআন ও হাদীসের আলােকে চিকিৎসা পদ্ধতি উদ্ভাবন করে মানবজাতির জন্য কল্যাণকর কিছু করার চেষ্টা করেছেন।
ডাঃ আলমগীর মতি ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলাধীন কলুকাঠি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম মরহুম মৌলভী গোলাম মোস্তফা এবং মাতার নাম রহিমা খাতুন। ডাঃ আলমগীর মতি’র শিক্ষা জীবনের হাতেখড়ি হয় তাঁর নিজ গ্রামে অবস্থিত কলুকাঠি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শৈশব থেকেই তিনি ছিলেন অভাবনীয় মেধার অধিকারী এবং কঠোর অধ্যবসায়ী। অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ থেকে “ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি” ডিগ্রী এবং ১৯৯৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারি” ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর ১৯৯৪ সালে ইন্ডিয়ান বোর্ড অব অলটারনেটিভ মেডিসিন থেকে “এম.ডি” ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি ১৯৯৫ সালে চায়না থেকে “নিউরো” ডিগ্রী অর্জন করেন। ২০০৬ সালের ১ এপ্রিল তিনি সোসাইটি অফ কম্পিমেন্টারি মেডিসিন এন্ড ফ্যামিলি ওয়েল ফেয়ার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টর অফ ফিলোসোফী (ডি.ফিল) ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি আমেরিকান বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে হারবাল বিষয়ের উপর “এম ফিল” করেন। তিনি ১৯৭৭-৭৮ সালে বাংলাদেশের ১৮টি হোমিও কলেজ ছাত্র সংসদের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় পর্যায়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে হোমিওপ্যাথিক ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তিনি একজন অন্যতম পুরোধা। ডাঃ আলমগীর মতি শুধু একজন চিকিৎসক ও গবেষকই নন, তিনি একজন সফল লেখকও বটে। পেশাগত জীবনে এসে তাঁর চিন্তা ও গবেষণার মাধ্যমে রচনা করেন চিকিৎসা শাস্ত্রের উপর বেশ কয়েকটি অমূল্য গ্রন্থ। তাঁর রচিত অন্যান্য গ্রন্থসমূহের মধ্যে বিশ্বনবী (সাঃ) এর চিকিৎসা বিধান, নিরোগ থাকার উপায়, সুস্থ থাকার সোনালী উপায়, হারবাল পদ্ধতিতে শতায়ু লাভের উপায় অন্যতম। তিনি তার কর্মদক্ষতা ও কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ওয়ার্ল্ড কোয়ালিটি কমিটমেন্ট এ্যাওয়ার্ড-২০০৬, দি ইন্টারন্যাশনাল এ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স ইন প্রোডাক্টস এন্ড সার্ভিস-২০০৭, দি ডায়মন্ড আই এ্যাওয়ার্ড ফর কোয়ালিটি কমিটমেন্ট এন্ড এক্সিলেন্স-২০০৭ সহ ১৫টি আন্তর্জাতিক সম্মাননা পুরষ্কার এবং অসংখ্য জাতীয় পুরষ্কারে ভূষিত হন। এই নশ্বর পৃথিবীতে তাঁর মতো মানুষ বার বার ফিরে আসুক এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।