"রাজনীতিতে ধর্ম মতাদর্শ ও সংস্কৃতি" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, ধর্মনিরপেক্ষতা, মৌলবাদ, নারীবাদ, রাষ্ট্রধর্ম, জঙ্গিবাদ ইত্যাদি নিয়ে তীব্র বাদ-প্রতিবাদ ও সহিংসতার মধ্য দিয়ে চলছে বাংলাদেশ। গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র , জাতীয়তাবাদ ও তার সম্পূরক আন্তর্জাতিকতাবাদ - জাতিগঠন ও রাষ্ট্রগঠন – কোনােটাই সাফল্যের ধারায় চলছে না। বিশ্বব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, এনজিও, সিএসও, বিবিসি রেডিও নির্ধারণ করে চলছে ইতিহাসের গতি। কোনাে অদৃশ্য শক্তি নিঃরাজনীতিকরণের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। সংস্কৃতির কথা আজকাল খুব উচ্চারিত হয়। কিন্তু বাস্তবে রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে, মন্ত্রিপরিষদে, জাতীয় সংসদে, প্রশাসনব্যবস্থায়, বিচারব্যবস্থায়, শিক্ষাব্যবস্থায় এবং জনজীবনের স্তরে স্তরে প্রাধান্য বিস্তার করে আছে অপসংস্কৃতি। এ গ্রন্থে এই বাস্তবতার চিত্র স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে বিশ্বস্ততার সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। সর্বোপরি সন্ধান করা হয়েছে সমস্যাবলির সমাধানের বাস্তবসম্মত প্রকৃষ্ট উপায়। যারা বাংলাদেশে উন্নততর ভবিষ্যত আকাঙ্ক্ষা করেন তাদের মধ্যে এ গ্রন্থ নতুন আশা, সাহস ও কর্মস্পৃহা সৃষ্টি করবে। পক্ষ-প্রতিপক্ষ নির্বিশেষে আমরা ভুল পথে চলছি, আমাদেরকে ঠিক পথে উত্তীর্ণ হতে হবে - দেশের বৃহত্তর শিক্ষিত সমাজে এই বােধ সৃষ্টি এ গ্রন্থের মূল লক্ষ্য।
Abul Kashem Fozlul Haque আবুল কাসেম ফজলুল হক ময়মনসিংহ জিলা স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষা লাভ করেন। তাঁর গোটা পেশাজীবন কাটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগে গবেষণা ও শিক্ষকতায়। ২০১১ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি কবিতা, ছোটগল্প ও প্রবন্ধ লিখেছেন এবং পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। তখন তাঁর লেখার বিষয়বস্তু ছিল সৌন্দর্য, প্রেম, প্রকৃতি ও জীবনদর্শনের অনুসন্ধিৎসা। ১৯৫২ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সময় তাঁর মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র থাকাকালে তিনি ১৯৬০-এর দশকে ছাত্র-আন্দোলনের প্রগতিশীল ধারায় সক্রিয় ছিলেন। সংস্কৃতি সংসদ, সুকান্ত একাডেমি, উন্মেষ, বাংলাদেশ লেখক শিবির, স্বদেশ চিন্তা সঙ্ঘ প্রভৃতি সংগঠনে থেকে তিনি বাংলাদেশের প্রগতিশীল চিন্তা ও কর্মে সক্রিয় ছিলেন এবং সর্বজনীন কল্যাণ ও প্রগতিশীল নতুন ভবিষ্যতের আশায় ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে লিখে চলছেন। মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি ঢাকা শহরে থেকে পরিচিত ও স্বল্পপরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধানত অর্থ সংগ্রহ করে দিয়ে ও আশ্রয় দিয়ে সহায়তা করেছেন। আবুল কাসেম ফজলুল হক ১৯৬০-এর দশক থেকে নতুন রেনেসাঁস আকাক্সক্ষা করেন। তিনি মনে করেন ভালো কিছু করতে হলে হুজুগ নয়, দরকার গণজাগরণ। সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস ইত্যাদি সকল বিষয়ে তাঁর লেখায় প্রগতির তাড়না কাজ করে।