"গোয়েন্দা কাহিনি : গিলগামেশ মহাকাব্য" বইটির সম্পর্কে কিছু কথা: গ্রিক অথবা সেল্তিক পুরাণের নায়কদের থেকেও অনেক প্রাচীন, তবে কেবল রূপকথা আর লােকগাঁথায় সীমিত নয় গিলগামেশের বিচরণ । গিলগামেশ নিশ্চিতভাবেই একজন ঐতিহাসিক রাজন—খ্রিস্টপূর্ব প্রায় সাতাশ শতকের দিকে তার রাজ্য ছিল সুমেরীয় নগরী “উরুক”, যার নিদর্শন এখনও বিরাজিত ওয়ার্কার (দক্ষিণ ইরাকের শহর) শহরতলিতে। গিলগামেশ ছিলেন বীর যােদ্ধা, মহাজ্ঞানী এবং ন্যায়পরায়ণ। তিনি ছিলেন নির্মাতা প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, ছয় মাইলসর্ঘ নগরীর ঘের-প্রাচীর গিলগামেশের অসাধারণ কীর্তি। মৃত্যুপরবর্তী গিলগামেশ পল্লবিত হন পুরাণে ও প্রবচনে ।। রচিত হয়েছিলাে বিচ্ছিন্ন বহুতর কাহিনী ও কিংবদন্তি । আসিরীয় সমাট আসুরবানিপালের বিশাল গ্রন্থাগারের ভগ্নাবশেষে অবশেষে উনিশ শতকের প্রথমার্ধে আবিষ্কৃত হয় বিভিন্ন গিলগামেশ-সংগ্রহ। আক্কাদীয় হরফে লিখিত গিলগামেশের ইতিকথা গ্রথিত হয়েছে একাদশ মৃত্তিকা ফলকে। আর কিছু বিচ্ছিন্ন অংশ আছে দ্বাদশতম ফলকে। সিন-লেকি-উন্নিনি’র নাম লেখা আছে সংগ্রাহক হিসাবে । অসিরীয় সাম্রাজ্য ও রাজধানী নিনেভা খ্রিস্টপূর্ব ৬১২ সালে পারস্য দেশীয় আক্রমণে ধ্বংস হয়; ধারণা করা হয় যে উন্নিনি’র সম্পাদিত সমগ্র সংগ্রহ এর পূর্বে অবশ্যই ফলকে গ্রথিত হয়েছিল। গিলগামেশ শুধুই প্রত্নতাত্ত্বিক অথবা পৌরাণিক পুরুষ হিসেবেই মুখ্য নন। শেষ বিচারে গিলগামেশ একজন নশ্বর মানুষ বৈ আর কিছু নন। প্রাজ্ঞ মহামহিম নাধিপতি। অথচ সাধারণ নরের মতােই অনব্যয় । অবিনশ্বর জীবনের আকুতির সাথে এক শক্তিমান নশ্বর মানুষের অবশেষ বােঝাপড়াই গিলগামেশ মহাকাব্যের মূল উপজীব্য।।