“৫২টি প্রোগ্রামিং সমস্যা ও সমাধান” ভূমিকা প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হলে প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধান করা বা যাকে আমরা প্রবলেম সলভিং বলি, সেই জিনিসটি করার কোনো বিকল্প নেই। কেউ যখন নতুন প্রোগ্রামিং শিখবে, তখন প্রোগ্রামিংয়ের মৌলিক ধারণাগুলো আয়ত্ত্বে আনার পরপর কয়েকশ ঘণ্টা প্রোগ্রামিং চর্চা করা আবশ্যক। ইন্টারনেটে হাজার হাজার প্রোগ্রামিং সমস্যা রয়েছে, যেগুলো সমাধান করে অনলাইন জাজে পরীক্ষা করা যায়। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে ওই সমস্যাগুলো বাংলা ভাষায় লেখা নয়। তাই আমাদের অনেক শিক্ষার্থীরাই সেখানে আগ্রহ পায় না। এছাড়া প্রোগ্রামিংয়ে যারা একেবারে নতুন, তাদের জন্য আলাদাভাবে কোনো রিসোর্স আমার চোখে পড়েনি। তাই এই বইটি লেখার কথা আমার মাথায় আসে।
বইটি ষষ্ঠ শ্রেণি ও তার ওপরের যেকোনো ক্লাসের শিক্ষার্থীর জন্য উপযোগী। তবে তার আগে জানা থাকতে হবে সি প্রোগ্রামিং ভাষা। আমার "কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ১ম খণ্ড" বইতে যতটুকু প্রোগ্রামিং দেখানো হয়েছে, এই বইয়ের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সেটুকু প্রোগ্রামিং জানাই যথেষ্ট। বইটি পড়ার সময় অবশ্যই প্রতিটি সমস্যা আগে নিজে চেষ্টা করতে হবে। কয়েক ঘণ্টা একনাগাড়ে চেষ্টা করেও কেউ যদি না পারে, তবে সমাধান দেখে শিখে নিতে হবে। আর ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের সমাধান জমা দিয়ে যাচাই করার কাজটিও করা যাবে। বইটি লিখতে আমার সহলেখক রিনি এবং রাফি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। এছাড়া আমার ছাত্র তুষারও অনেক পরিশ্রম করে বইটি রিভিউ করেছে। আবার বইয়ের সমস্যাগুলোর কয়েকটি সিপিবুক ওয়েবসাইট থেকে নেওয়া যেগুলো তৈরি করেছেন ইকরাম মাহমুদ ফাহিম, তানভীরুল ইসলাম, শুভানন রাযিক প্রমুখ। তাদের পরিশ্রম সফল হবে যখন আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দাপিয়ে বেড়াবে। সেই দিনের অপেক্ষায় রইলাম।
বইটি কাদের জন্য দক্ষ প্রোগ্রামার হওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের চর্চা করা। তাই যারা নতুন প্রোগ্রামিং শিখছে, তাদের জন্য উপযোগি করে ৫২টি প্রোগ্রামিং সমস্যা দেওয়া হয়েছে এবং সেগুলোর সমাধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সমাধান দেখানোর সময় সি প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। যারা ভবিষ্যতে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চায় - যেমন জাতীয় হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড, এসিএম আইসিপিসি, তারা প্রোগ্রামিং সমস্যা সমাধানের চর্চা এই বই দিয়েই শুরু করতে পারে। এছাড়া বইটি প্রোগ্রামিংয়ের জগতে নতুন যে কারো জন্য উপযোগী হবে।
১৯৮২ সালের ৭ নভেম্বর ময়মনসিংহে জন্ম নেওয়া তামিম শাহরিয়ার সুবিন পেশায় একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। তার শিক্ষাজীবন শুরু হয় হোমনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। অতঃপর এ কে উচ্চ বিদ্যালয় ও নটরডেম কলেজে পড়া শেষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনে শেষ করেন। সরকারি কর্মকর্তার ঘরে জন্ম নেওয়া সুবিনের প্রধান আকর্ষণ প্রোগ্রামিংকে ঘিরে। তিনি প্রোগ্রামিং বিষয়ক প্রায় পাঁচশোটি সমস্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে সমাধান করেছেন। নানা ভাষায় কোডিং করতে পারলেও তার পছন্দের প্রোগ্রামিং ভাষা পাইথন। তবে তার শখ লেখালিখি এবং ভ্রমণ। শখ এবং আগ্রহের বস্তুকে এক বিন্দুতে মিলিয়ে সুবিন লিখে ফেলেছেন বেশ কয়েকটি বই। তামিম শাহরিয়ার সুবিন এর বই সমূহ’র বিষয়বস্তু হলো কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, যার বেশিরভাগ বাংলা ভাষায় লিখিত। কীভাবে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কম্পিউটার প্রোগ্রামিং বিষয়ে জড়তা দূর করা যায় সে ভাবনা থেকেই তিনি বাংলায় প্রোগ্রামিং বিষয়ক বই লেখা শুরু করেন। সহজ, সাবলীল ভাষায় লেখা বলে তামিম শাহরিয়ার সুবিন এর বই পাঠকের আত্মস্থ করতে বেগ পেতে হয় না। তামীম শাহরিয়ার সুবিন এর বই সমগ্র এর মাঝে তাই দেখতে পাওয়া যায় প্রোগ্রামিং গাইডলাইন, পাইথন দিয়ে প্রোগ্রামিং ও গণিতের মতো খটমটে বিষয়ের উপস্থিতি। তিনি বাংলাদেশে থাকাকালে মুক্ত সফটওয়্যার লিমিটেড ও দ্বিমিক কম্পিউটিং নামক দুটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াডের একজন একাডেমিক কাউন্সিলর হিসেবেও নিয়োজিত রয়েছেন। বর্তমানে তিনি সপরিবারে সিঙ্গাপুরে বসবাস করছেন।