"আন্দামান হয়ে ভেনিসে" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ ভ্রমণ নিয়ে বেশ কয়েকটি বই লিখেছি। এগুলােকে ভ্রমণ কাহিনী হিসেবেই গণ্য করি। বিশ্বের যে সব দেশে যাই সে অভিজ্ঞতায় পাঠকদের যুক্ত করতেই এই প্রয়াস। বিদেশ ভ্রমণ করতে কে না চায়, তবে সবার পক্ষে নানাবিধ কারণে হয়ে উঠে না, তা নিয়ে নতুন করে তেমন কিছু বলবার নেই। তবে অনেক পাঠক ভ্রমণকাহিনী পড়তে ভালবাসেন তা সবাই জ্ঞাত আছেন। তাদের উদ্দেশ্যেই এই বইটিও লেখা। এবারের সফর ছিল মূলত বিশ্বের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি হিসেবে খ্যাত অন্যতম দেশ সুইজারল্যান্ডকে কেন্দ্র করে। যারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন তাদের জন্য এ দেশটি অত্যন্ত আকর্ষণীয়। সুইজারল্যান্ড ছাড়াও গিয়েছিলাম ইউরােপের সবচেয়ে উঁচু পর্বতরাজি আলপস্-এর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মন্ট ব্লঙ্ক-এ। চড়তে হয়েছে ক্যাবল কার-এ। প্রায় আধাঘন্টার সফর। দ্বিতীয় ধাপে ক্যাবল কারটি ছিল ঝুলন্ত, কোনাে সাপাের্ট পিলার ছিল না। সমস্ত পথটি অতিক্রম করতে হয়েছিল গ্লেসিয়ারের উপর দিয়ে। জীবনের এক বিরল অভিজ্ঞতা। সফর শেষ করেছি আরেক স্বপ্নের শহর ইতালির ভেনিস দিয়ে। এই বিচিত্র অভিজ্ঞতার বিবরণও রয়েছে। বিবরণ রয়েছে আলাদাভাবে আন্দামান বা উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের সময়কার কালাপানির। বঙ্গোপসাগরে ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জ। ভারতের পশ্চিমবাংলার বাইরে সর্ববৃহৎ বাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চল। যেখানে সঞ্চিত হয়েছে বিচিত্র অভিজ্ঞতা। ব্রিটিশ বিরােধী আন্দোলনের নেতাদের কারাগার সেলুলার জেল-এর বিবরণ দেবার চেষ্টা করেছি। এখানকার বন্দিদের আত্মত্যাগের ইতিহাস স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। বহু বিপ্লবীকে ফাঁসিতে ঝুলানাে হয়েছিল এখানে। জেলের ফাঁসির মঞ্চ এখনও সযত্নে রাখা রয়েছে এখানে। এক ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা। তাই এ বইয়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘আন্দামান হয়ে ভেনিসে’।
Brigedier J.M. Sakaoat Hosen Ret. ১৯৪৮ সনের ১ ফেব্রুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৬ সনে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় দু’বছর পাকিস্তানের বন্দি শিবিরে কাটিয়ে ১৯৭৩ সনে দেশে প্রত্যাবর্তন করেন এবং ১৯৭৫ সনের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ৪৬ ব্রিগেডে স্টাফ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৭৯-৮১ সনে ঢাকায় সেনাসদরে গুরুত্বপূর্ণ পদে অপারেশন ডাইরেক্টরেট নিয়োজিত হন। পরে তিনি ব্রিগেডের অধিনায়ক হিসেবে দুটি ইনফেনট্রি ব্রিগেড ও একটি আর্টিলারি ব্রিগেডের অধিনায়ক ছিলেন। লেখক বাংলাদেশের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করে দ্বিতীয়বারের মত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিখ্যাত ইউ এস এ কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ জেনারেল কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। তিনি পাকিস্তানের ন্যাশনাল ডিফেন্স এ ডি সি ইসলামাবাদ ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজে মাস্টার্স এবং ২০১১ সনে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্, ঢাকা থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি দেশী-বিদেশী বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে নিরাপত্তা, ভূ-রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণধর্মী কলাম ও বইয়ের লেখক হিসেবে অধিক পরিচিত। এ পর্যন্ত তার তেইশটি বহুল পঠিত বই প্রকাশিত হয়েছে। তা ছাড়া দেশী-বিদেশী ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনীতি এবং নির্বাচন বিষয়ে বিশ্লেষক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। ২০০৭ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সনের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ বছর তিনি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার রয়েছে। ২০০৮ সনের জাতীয় এবং স্থানীয় সরকারের পাঁচ হাজারের বেশি নির্বাচন অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা।