সমাজের প্রান্তিক জনজীবনের আলেখ্যধর্মী উপন্যাস কুয়াশায় ঢাকা ভাের। এ উপন্যাসের উপজীব্য ওপরতলার মানুষের চোখে ঘৃণ্য, মর্যাদাহীন, ভাসমান কিছু মানুষের জীবনযুদ্ধ, তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের টানাপােড়েন আত্মজিজ্ঞাসা, জীবনবােধ ও দেশপ্রেম। কাহিনি ব্যাপৃত হয়েছে তিন দশক ধরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের দিন পর্যন্ত। কেন্দ্রীয় চরিত্র লালু যুদ্ধশিশু) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চট্টগ্রামের বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে লালুকে কুড়িয়ে পায় ভাসমান নারী ফুলি। সে বেড়ে ওঠে ফুলি এবং অন্যান্য ভাসমান নারীর স্নেহ-সাহচর্যে।তাঁর জীবনের নানা বাঁকে আবর্তিত হয়েছে কাহিনি। এই তিন দশক জুড়ে অসংখ্য চরিত্রের মধ্যে তার বিচরণ। জীবন ও রাজনীতির লড়াই ও সংগ্রাম সেখানে সাধারণ যােগসূত্র। অন্ধকার জীবনে পতিত নারীর মানবিক ভালােবাসা সুস্থ ও সুন্দর জীবনের জন্যে তাদের স্বপ্ন এ উপন্যাসে পেয়েছে উজ্জ্বল মহিমা। লালুর বেঁচে থাকার লড়াই যুক্ত হয়েছে দেশের মুক্তির লড়াইয়ের সঙ্গে। অমােঘ মৃত্যুর বেদনাকে ছাপিয়ে উঠেছে মুক্ত স্বদেশের ভাের। তা এ উপন্যাসকে করে তুলেছে। ব্যঞ্জনাময়।