বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ থেকে নেওয়া সখি সাধারণ পরিবারের মেয়ে। তার বাবা বিদেশে গিয়ে আর ফেরেন নি। বাবাহীন জীবন মেনে নিতে কষ্ট হলেও তারা কিন্তু জীবনযুদ্ধে জয়ী হয়ে এখন একটা সচ্ছল জীবন যাপন করছে। বিয়ের আট বছর পরে কী ভাবে যেন সামান্য পরিচয় থেকে সখি জড়িয়ে পড়ে আরেক পুরুষের সঙ্গে। সখি সেই প্রেমের মধ্যে দিয়ে নিজেকে খোঁজে। সেই খোঁজার পথে সে আরও অনেকের সঙ্গে প্রেম করতে থাকে। এক সময়ে সে বাবাকে খুঁজে পায়, দেখা করে দার্জিলিংয়ে। বাবার অন্তর্ধানের রহস্য উন্মোচিত হলে বাবার প্রতি তার ভালোবাসা নতুন বেগ পায়-বাবা যে তার জীবনে একটা বিশাল স্থান অধিকার করে আছে সেটা সে শেষে বুঝতে পারে। এরপর সে সত্যিই তার আরেক সত্তাকে সে খুঁজে পায়। এই অনবদ্য জীবনকাহিনীর মধ্যে দিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বিশ্বে নরনারীর সম্পর্কের গতিধারায় অপরিসীম পরিবর্তন। একাধিক প্রণয় সম্পর্ক আদিকাল থেকে মানব সমাজে চলে আসছে বিভিন্ন নামে, যেমন পরকীয়া প্রেম, বা বিবাহ-বহির্ভুত যৌন সম্পর্ক, বা বহুগামিত্ব। বর্তমানে ইংরেজি পলিঅ্যামোরাস রিলেশানস (Polyamorous Relations) বা পলিয়ামিক (Polyamic) শব্দচয়ন একই বিষয় বোঝায় তবে এই শব্দচয়নে বিষয়টির নেতিবাচক দিকটিকে অগ্রাহ্য ও অমান্য করে সেটাকে স্বীকৃতি দেয়। বর্তমান সময়ে নরনারীর জীবনযাত্রায় এটা একটি প্রচলিত ও গৃহীত বাস্তবতা। আরেক সত্তা বাংলা সাহিত্যে সম্ভবত পলিঅ্যামোরাস সম্পর্কের ওপর প্রথম ও একটি প্রচণ্ড আঘাত হানা ব্যতিক্রমী উপন্যাস।
১৯৭১এ মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামাবাদে কর্মরত ড. ফজলুল আলম পালিয়ে সপরিবারে ইংল্যান্ডে চলে যান। ১৯৯৬ সনে সুদীর্ঘ পঁচিশ বছর পরে দেশে ফিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে লাইব্রেরি অটোমেশান প্রজেক্ট (উটখঅচ) চালু করেন ও ইউএনডিপি অনুদানের প্রস্তাবিত সকল শর্ত সফলভাবে সময়মত কার্যকর করেন। প্রথম কয়েক বছর বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কলাম লিখলেও ২০০২ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবসর পেয়ে সৃজনশীল ও মননশীল সাহিত্যে মনোনিবেশ করেন। ২০০৪ সনে প্রকাশিত উপন্যাস ক্রান্তিকালে প্রতারক লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে ডিগ্রি কোর্সে মনোনীত হয়। ইংল্যান্ডে তার দুটি প্রবন্ধ/গবেষণা বই প্রকাশিত হয়। সেখানে থাকা কালে তিনি নিজ খরচে লাইব্রেরিয়ানশীপে চার্টার্ড, এথনিক রিলেশান্সে মাস্টার্স ও কালচারাল স্টাডিজে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৭ সনে সংস্কৃতির সত্যমিথ্যা প্রকাশ করে তিনি নিজেকে একজন সংস্কৃতি অধ্যয়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তারপর তিনি প্রতি বছর সংস্কৃতি বিষয়ে একটা করে সুচিন্তিত ও তথ্যমূলক বই প্রকাশ করেন। ২০১০ সনে প্রকাশিত সংস্কৃতি সমগ্র সুধী মহলে ও বিদ্বদ্গোষ্ঠীতে বহুল সমাদৃত। তিনি সম্পূর্ণ নতুন বিষয় ‘সংস্কৃতিতত্ত্ব বিরোধিতা’র ওপরও লিখেছেন। তার পাঁচটি ছোটগল্প নাটক ও টেলিফিল্ম হিসেবে টেলিভিশনে প্রদর্শিত হয়েছে। তাঁর একটা উপন্যাস থেকে চলচ্চিত্র নির্মানাধীন। তিনি স্যাটেলাইট চ্যানেলে সর্বপ্রথম বিষয়ভিত্তিক টক-শো ‘কড়া আলাপে’র পরিকল্পক ও উপস্থাপক। তিনি দুটো গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার পেয়েছেন, সিটি ব্যাংকÑআনন্দআলো সাহিত্য পুরস্কার (২০০৮) ও বাংলা একাডেমি পরিচালিত সা’দত আলি আখন্দ সাহিত্য পুরস্কার (২০১৪)।