"যুদ্ধে যাবোই" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: স্কুলে ঢুকে অবাক হয়ে যায় শান্ত। ক্লাশরুমে ছাত্র-ছাত্রী নেই। স্কুলের মাঠে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিচ্ছে বেশ কিছু তরুণ ও যুবক। বন্ধু চুন্ন জানায়- যুদ্ধে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা। নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানীদের অন্যায়-অত্যাচার, শােষণ-নিপীড়ন ও গণহত্যা সম্পর্কে জানতে পারে শান্ত। এক সময় তাদের শহরে পাকিস্তানী মিলিটারি আসে। নির্বিচারে হত্যা করে তারা মানুষ। পুড়িয়ে, জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয় জনপদ। এসব দেখে শান্ত নিজেও যুদ্ধে যেতে চায়। কিন্তু অল্প বয়সের কারণে তার যুদ্ধে যাওয়া হয়ে ওঠেনা। অত্যন্ত কাছ থেকে শান্ত দেখে মুক্তিযােদ্ধাদের পাশাপাশি দেখে তার পরিচিত কিছু মানুষ হাত মেলাচ্ছে হানাদার পাকিস্তানী সৈন্য ও স্বাধীনতা বিরােধীদের সাথে। এক সময় ছােট্ট শহরটা ছাড়তে হয় তাদের। অনেক কষ্টে শান্তরা গিয়ে পৌছে যায় নানাবাড়িতে। যাওয়ার পথে প্রত্যক্ষ করে বিস্তীর্ণ জনপদে পাক বাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ। শান্ত'র চাচা, মামা এবং মামাতাে ভাইয়েরা যুদ্ধে গেছে। যুদ্ধে যােগ দিতে একদিন বাড়ি ছাড়ে বাবাও। এক সময় যুদ্ধ শেষ হয়। অন্যরা বাড়ি ফিরলেও ফিরে আসেনা শান্তর বাবা। শান্তর প্রিয় নেছার মামা ফিরে আসে পঙ্গু হয়ে। শান্তর কেবলই মনে হয়- যুদ্ধ মানে বাবার মৃত্যু, মায়ের কান্না আর নেছার মামার পঙ্গু পা। যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে শান্তরা যখন যুদ্ধের ক্ষত কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে, যুদ্ধের ফলাফল যখন একটু একটু করে পেতে শুরু করেছে, তখন এক কাকভােরে স্পর্ধিত কণ্ঠ বেতারযন্ত্রে ঘােষণা করল- মুক্তিযুদ্ধের মহান নেতা, জাতির পিতাকে হত্যা করা হয়েছে। তীব্র রােষে চিৎকার করে উঠল নেছার মামা: ‘কে তারে মারে?' এরপর বদলে গেল অনেক কিছু। স্বাধীনতার পাঁচ বছর পর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রধান অতিথি জনৈক মন্ত্রীর সাথে চিহ্নিত এক রাজাকারকে দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল শান্ত।
শিল্প-সাহিত্যের ক্ষেত্রে হারুন রশীদের পরিচয়- তিনি একজন নাট্যকার ও অভিনেতা। বহুসংখ্যক নাটক লিখেছেন তিনি মঞ্চ পথ ও টেলিভিশনের জন্য। অভিনয় করেছেন অনেক নাটকে। হারুন রশীদ পেশায় সরকারি কর্মকর্তা- বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের সদস্য। কিশাের বয়স থেকেই লেখালেখির সাথে যুক্ত। সরকারি চাকরিতে যােগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত ছাত্রজীবনেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতা পেশায়। লেখাপড়া করেছেন ফরিদপুরের ভাঙ্গায়, সিরাজগঞ্জে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে।