"সাংবাদিকতা: অফলাইন অনলাইন" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ ইন্টারনেট প্রযুক্তি সাংবাদিকতায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। সর্বশেষ গণমাধ্যম হিসেবে অনলাইন সংবাদ মাধ্যমের আবির্ভাব হয়েছে। নতুন নতুন ডিজিটাল ডিভাইস ও প্লাটফর্মের আবির্ভাবে নাগরিকদের সংবাদ গ্রহণ বা পাঠাভ্যাসেও এসেছে পরিবর্তন। কাগজে পড়ার চেয়ে কম্পিউটার, ট্যাবলেট বা মােবাইল স্ক্রিনে সংবাদ পড়ার হার ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রযুক্তি-নির্ভর নতুন সংবাদ মাধ্যমের প্রভাবে মুদ্রণ মাধ্যম বহুমুখী চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এসব চ্যালেঞ্জ মােকাবেলায় সংবাদ মাধ্যমগুলাে অর্থ উপাজনের বিভিন্ন সৃজনশীল পথ, পন্থা, কৌশল ও ব্যবসা মডেল উদ্ভাবন করেছে। ফলে সাংবাদিকতায় নতুন নতুন ধরন ও ধারণার সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ অর্থনীতি (newsonomics) সাংবাদিকতার এখন মূখ্য বিষয়। পঞ্চ-ই সাংবাদিকতা অর্থাৎ পরীক্ষামূলক (experimental) সাংবাদিকতা, বাস্তব অভিজ্ঞতাসৃজনী (experiencial) সাংবাদিকতা, ব্যাখ্যামূলক (explanatory) সাংবাদিকতা, আবেগঘন (emotional)। সাংবাদিকতা এবং মিতব্যয়ী (economical) সাংবাদিকতার চর্চা একুশ শতকে সংবাদ মাধ্যমগুলাের টিকে থাকার প্রধান হাতিয়ার হিসেবে দেখা দিয়েছে। সাংবাদিকতার এসব সর্বশেষ ধরন, ধারণা ও প্রবণতা সাংবাদিকতা: অফলাইন অনলাইন শীর্ষক গ্রন্থে অনুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদ মাধ্যমের সৃজনশীল উদ্যোগ ও উদ্ভাবনসমূহ উপস্থাপনও করা হয়েছে এখানে। পাশাপাশি ‘সমাধানকেন্দ্রিক সাংবাদিকতা’ ও ‘ইমবেডেড জার্নালিজম' সম্পর্কে আলােচনা করা হয়েছে। সাংবাদিকতা পঠন-পাঠন ও পেশা, সাংবাদিকের তথ্য অধিকার, সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আধেয় (content), সংবাদ সংস্থা সাংবাদিকতা, সংবাদপত্রের মর্গ এবং শ্রম-ফিচার সম্পকে বিশ্লেষণও রয়েছে গ্রন্থটিতে। বাংলাদেশে সংবাদ মাধ্যমসমূহের জন্য প্রণীত নীতিমালাসহ সাংবাদিকদের পদবী ও বেতন-ভাতা সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। এছাড়া এ গ্রন্থে তাত্ত্বিক পটভূমিসহ বাংলাদেশে উন্নয়ন যােগাযােগের বাস্তবতা ও গণমাধ্যমসহ অন্যান্য যােগাযােগ মাধ্যমের ভূমিকাও পর্যালােচনা করা হয়েছে। গ্রন্থে উপস্থাপিত সাংবাদিকতার সাম্প্রতিক বিষয়সমূহ সাংবাদিক, পাঠক, সংবাদ মাধ্যমের নীতিনির্ধারক, গবেষক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জন ও সৃষ্টিতে সহায়ক হবে।
মাহামুদুল হক একজন শিক্ষক, সাংবাদিক, গবেষক, লেখক, প্রশিক্ষক ও পলিসি পরামর্শক। বর্তমনে তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর-এর গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অধ্যাপনা করছেন। শিক্ষকতায় যোগদানের পূর্বে তিনি ছিলেন ডেইলি স্টারের মেট্রো এডিটর। এর আগে তিনি সংবাদ সংস্থা ইউএনবিতে সহ-সম্পাদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। যুক্তরাজ্যের এনজিও সিসিএ ও সেইফটি অ্যান্ড রাইটস সোসাইটি’র গবেষকও ছিলেন। সাংবাদিকতায় নতুন ধারণার উদ্ভাবন, ধারণায়ন ও পরিচিতকরণে তিনি কাজ করে চলেছেন। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘মিডিয়া ফর মিডিয়া’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন। এময় তিনি ‘ভার্চুয়াল সংবাদকক্ষ’ তৈরি করে অনলাইনে সংবাদ ব্যবস্থাপনা, সম্পাদনা ও বিতরণের নজির স্থাপন করেন। তিনি জাতীয় প্রেসক্লাব, বিএফইউজে, ডিইউজে ও ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের সদস্য। দেশি-বিদেশি গবেষণামূলক জার্নাল ও গণমাধ্যমে তাঁর প্রায় ২০০টি প্রবন্ধ-নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ভারত, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, কানাডা, ইউএসএসহ বেশকিছু দেশে কনফারেন্সে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন এবং সঞ্চালক হিসেবে দায়িত্বও পালন করেছেন। সহ-সম্পাদকসহ প্রায় এক হাজর সাংবাদিককে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপি’র ব্যাবসা ও মানবাধিকার সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শকসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার পরামর্শক হিসেবে কাজ করেছেন।