"সহজ বাংলা অভিধান" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ বাংলা বানানের নিয়ম ও বাংলা বানান অভিধান প্রকাশের পর বাংলা একাডেমীর কাছে পাঠক সমাজ স্বাভাবিকভাবেই আশা করতে পারেন যে, বাংলা একাডেমীর যাবতীয় অভিধান এর উপর ভিত্তি করে প্রণীত হবে। ইংলিশ-বেঙ্গলি ও বেঙ্গলিইংলিশ ডিকশনারির পর বাংলা একাডেমীর এ সহজ বাংলা অভিধানের প্রকাশ সে প্রত্যাশা আংশিকভাবে পূরণ করতে সফল হলে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করবাে। তবে এখন এটুকু অন্তত দাবি করা যায় যে, আমাদের দেশ আজ ব্যবহারিক অভিধানে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ভাষা শিক্ষার বুনিয়াদ শক্ত করতে হলে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই শব্দসচেতন এবং অভিধানমনস্ক হতে হয়। দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সচেতনতাকে ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এ কথা মনে রেখে বাংলা একাডেমীর এ সহজ অভিধানটি আমরা বিশেষভাবে তরুণদের জন্য তৈরি করেছি। অভিধানের আকার প্রকৃতি ও ওজন তরুণ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায়ই ভীতিকর হয়। সহজে বহনযােগ্য বর্তমান অভিধান প্রণয়নের সময়ে আমরা সে কথা মনে রেখেছি। এছাড়া অভিধানকে তরুণদের মধ্যে প্রীতিকর করে তােলার জন্য যথাসাধ্য সহজ ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। ভূক্তি বেছে নেওয়া হয়েছে ব্যবহারিক প্রয়ােজনের দিকে লক্ষ্য রেখে পদনির্দেশ করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য এবং ক্ষেত্রবিশেষে উদাহরণ দিয়ে অর্থ বােঝানাের চেষ্টা করা হয়েছে। সাম্প্রতিকতম কিছু শব্দ এবং বেশ কিছু বহুল প্রচলিত ইংরেজি শব্দ এখানে প্রথম বারের মতাে সংকলিত হলাে। ব্যুৎপত্তি, উচ্চারণ ও অন্যান্য ব্যাকরণ-সংকেত নির্দেশ করে অভিধানটিকে গুরুগম্ভীর এবং ওজনে ভারী করা হয়নি। উদ্দেশ্য একটাই, দেশের প্রতিটি তরুণ যাতে তাদের স্কুলব্যাগে একটি করে অভিধান বহন করতে পারে এবং প্রয়ােজনে তার কাঙ্ক্ষিত শব্দটির সহজ অর্থ খুঁজে পায়। এ অভিধানে শীর্ষশব্দের সংখ্যা প্রায় বিশ হাজার। সেদিক দিয়ে তাৎক্ষণিক প্রয়ােজন মেটাতে এটি বড়দেরও কাজে লাগবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এ অভিধানের শব্দচয়ন করতে আমরা সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান, ব্যবহারিক বাংলা অভিধান এবং বিশেষ করে ছােটদের অভিধানের সাহায্য নিয়েছি।
মােহাম্মদ হারুন অর রশীদ জন্ম: মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুর, সিরাজদিখান থানার টোল বাসাই গ্রাম। একাডেমিক শিক্ষা : রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম.এস.এস, এল.এল.বি। পেশা : অ্যাডভােকেট লেখক স্কুলজীবন থেকেই পূর্বপাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। '৬৮, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে লেখক সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতাত্তোর লেখকের প্রথম একুশের সংকলন ‘রক্তাভাে বাংলা প্রকাশিত হয় ১৯৭২। সালে। সে বছরই লেখকের কয়েকটি কবিতা প্রকাশিত হয় বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনে। লেখক একসময় ‘উচ্চারণ সহিত্যচক্র' নামক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ‘চর্চা' নামক একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করেন। উচ্চারণ। সাহিত্যচক্র দেশের ২৮টি প্রগতিশীল সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন। লেখক জাতীয় মিডিয়া চ্যানেল আই’-এর ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানে মুখপত্র ‘জনভাষ্য ২০০৮-এর একজন নিবন্ধকার নির্বাচিত হন। লেখকের গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, রাজনৈতিক ইতিহাস, কাব্যগ্রন্থ, শিশু সাহিত্য ইত্যাদি নিয়ে মােট ১১টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে । লেখকের অপ্রকাশিত উপন্যাস ‘পাথর মানুষ’ ও ‘আমাজন জঙ্গলে ১২০ দিন। লেখক একজন একনিষ্ঠ আইনজীবি।