“বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সম্ভাবনা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ ১৯৯০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত এগারােটি প্রবন্ধের সংকলন এই বইটি। বিষয়বস্তুর ধারণা বই-এর নাম থেকেই প্রতিভাত হয়। এখানে গুঢ় বক্তব্য হলাে যে বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলতঃ শক্ত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। এই দেশের সম্পদ হচ্ছে দেশের উর্বরা মাটি এবং বৃষ্টিস্নাত আবহাওয়া যেখানে প্রতি দুইমাসে ঋতু বদল হয়। এছাড়াও রয়েছে এখানকার কর্মঠ, বুদ্ধিমান ও সপ্রতিভ জনগন। শিক্ষার আলাে থেকে বঞ্চিত জনগােষ্ঠি। এখনাে প্রায় চল্লিশ শতাংশ হলেও অরা সহজেই নব নব কৌশল ও প্রযুক্তি গ্রহণে আগ্রহী এবং সফলও বটে। যে সময়ে প্রবন্ধগুলাে লেখা হয় সেই সময়কার বাস্তবতা, নানা অর্থনৈতিক সমস্যা এবং উন্নয়ন উদ্যোগে ব্যর্থতা ও সাফল্য এই লেখাগুলােতে তােলে ধরা হয়েছে। কতিপয় প্রবন্ধে অর্থনৈতিক কলা-কৌশলের নানা বিষয়ে মতামত ও সমসাময়িক বিতর্কও স্থান পেয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা নির্মোহ বর্ণনা ও বিবেচনা শেষে যে বার্তাটি উচ্চকণ্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় তা হলাে দেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা। সর্বত্র রয়েছে অনাচার পরিহারের সুপারিশ এবং করণীয় পদক্ষেপের তালিকা এবং তার উপর ভিত্তি করেই হলাে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নিশ্চিত আশাবাদ।
আবুল মাল আবদুল মুহিত লেখক, গবেষক, উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ, প্রশাসক, পরিবেশবিদ ও অর্থনীতিবিদ আবুল মাল আবদুল মুহিত সিলেটের এক সম্ভান্ত পরিবারে ২৫ জানুয়ারি, ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। কৈশোরে ছাত্র সংগঠন এবং ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন এবং ১৯৫৫ সালে সলিমুল্লাহ হল ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি ও সর্বদলীয় কর্মপরিষদের আহবায়ক থাকাকালে কিছুদিন জেলেও ছিলেন। কর্মজীবনে পূর্ব পাকিস্তান এবং কেন্দ্রীয় পাকিস্তান সরকারের প্রায় ১৩ বছর চাকরি করে ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসে অর্থনৈতিক কাউন্সিলর হিসেবে নিযুক্তি পান ১৯৬৯ সালে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ৩০ জুনে তিনি আনুগত্য পরিবর্তন করেন এবং মার্কিন কূটনৈতিক, শিক্ষামহল ও সংবাদমাধ্যমে প্রচারণায় ও জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২৫ বছরের সরকারি চাকরির পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব হিসেবে স্বেচ্ছা অবসরে যান ১৯৮১ সালে । ১৯৮২ এবং ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলেন এবং ESCAP-এর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলন গড়ে উঠে। প্রথমে ‘পরশ এবং পরে বাপা'-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাই এসোসিয়েশনেরও পরপর দুই মেয়াদে সভাপতি ছিলেন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হন। ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পেয়েছেন অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব।