ঘটনা ঘটার আগে... শ্যারন ফেয়ারচাইল্ড এবং রবার্ট ডালটন লিভ টুগেদার করে। রবার্ট একটা কসমেটিকসের দোকানে সেলসম্যান। শ্যারন পেশায় লেখিকা। তার লেখার প্রিয় বিষয় হলাে রােমান্টিক কাহিনি। ইতােমধ্যে তার কয়েকটি বই বেরিয়ে গেছে। বইগুলাে পাঠকপ্রিয়তাও পেয়েছে বেশ। শ্যারনের বাবা আছেন, মা নেই। তবে শ্যারনের ছােটবেলায় তিনি শ্যারনের মাকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আর এ পরিবারটির সঙ্গে যােগাযােগ রাখেননি। শ্যারন শুনেছে তার বাবা ইউরােপের একটি দেশে থাকেন। আর রবার্টের মা-বাবা, ভাই-বােন কেউ নেই। সে শ্যারনের একটি রােমান্টিক কাহিনি পড়ে ওকে ফোন করেছিল এবং বইটির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিল। পরে সে শ্যারনের সঙ্গে দেখা করার আগ্রহ প্রকাশ করে। একটি রেস্টুরেন্টে ওদের দেখা হয়। এবং দু'জনের মধ্যেই প্রথম দর্শনে প্রেমের ব্যাপারটি ঘটে যায়। স্বর্ণকেশী শ্যারন একটু মােটা গড়নের হলেও তার মুখখানা ভারি মিষ্টি। তবে তার শারীরিক সৌন্দর্যের চেয়ে তার খ্যাতি এবং ব্যাংক ব্যালান্সই রবার্টকে বেশি আকর্ষণ করেছিল। তাছাড়া তার মতলব ছিল যদি কোনমতে পটিয়ে শ্যারনের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে ওঠা যায় তাহলে তিন মাসের ভাড়া বাকি বলে বাড়িওয়ালার রক্তচক্ষু এবং গালিগালাজের কবল থেকেও মুক্তি মেলে। ছয় ফিট লম্বা, কিউপিড দেবতার মতাে মুখাবয়ব, অ্যাথলেটদের মতাে পেটানাে শরীরের রবার্টকে দেখে বেশিরভাগ সুন্দরীই ফিদা হয়ে যায়। সেখানে টেনেটুনে পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার শ্যারন রবার্টকে দেখে যে প্রেমে পড়ে যাবে সেটা অতি স্বাভাবিক ঘটনা। পরিচয়ের তিন দিনের মাথায় যখন শ্যারন জানতে পারল সাহিত্যপ্রেমী রবার্ট বাড়িভাড়া দেয়ার বদলে সে টাকা দিয়ে শুধু বই কিনে ভাড়ার দেনা বাড়ানাের কারণে বাড়িওয়ালা তাকে রাস্তা মাপতে বলেছে তখন বেচারির জন্য তার সত্যি মায়া হলাে। একটু ইতস্তত করে সে রবার্টকে তার নিজের ফ্ল্যাটে আসার আমন্ত্রণ জানাল। রবার্ট মুখে প্রচুর আপত্তি জানালেও ভিতরে খুশিতে বাগবাগ। সে শ্যারনকে ঝামেলায় ফেলতে চায় না ইত্যাদি বললেও শ্যারন তার কথা শুনল না। পরের সপ্তাহেই সে রবার্টকে তার মালসামাল নিয়ে ফ্ল্যাটে চলে আসতে বলল। রবার্ট বগল বাজাতে বাজাতে দুটো সুটকেস সম্বল করে পরের উইকএন্ডে হাজির হলাে শ্যারনের ফ্ল্যাটে। সুটকেস থেকে শুধু রবার্টের নিত্য প্রয়ােজনীয় জিনিসপত্রই বেরুল, কোনাে বই নয়। রবার্ট ব্যাখ্যা দিল ঘর ভাড়া মেটাতে সে তার কয়েক হাজার বই সব পুরনাে বইয়ের দোকানে বিক্রি করে দিয়েছে। অবশ্য এ নিয়ে শ্যারন আর মাথা ঘামায়নি। দুজনের লিভ টুগেদার লাইফ মােটামুটি চলে যাচ্ছিল। তবে শ্যারন কল্পনাও করেনি তার নিরুদ্বেগ জীবনে শীঘ্রি এক অশনি সংকেত দেখা দেবে। কিছু অন্ধকারের মুখ হানা দেবে যা ওর শান্ত জীবনটাকে করে তুলবে অশান্ত এবং ঘটতে থাকবে দুঃস্বপ্নকে হার মানানাে ভয়ঙ্কর সব ঘটনা।