“নেপোলিয়ন হিলের চিন্তা করুন এবং ধনী হোন" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ যখন আপনি আরম্ভ করবেন চিন্তা করুন এবং ধনী হােন তখন পর্যবেক্ষণ করবেন যে। ধনীরা একটি মানসিক অবস্থা দিয়ে আরম্ভ করে, নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের সাথে, যা করা কঠিন। কাজ নয়। আপনি এবং প্রত্যেকেই এটা জানার জন্য আগ্রহী হবেন যে ধনীরা কি করে। এই মানসিক অবস্থা অর্জন করে। আমি আমার গবেষণায় পঁচিশ বছর ব্যয় করেছি,। ২৫,০০০ মানুষকে বিশ্লেষণ করেছি, কারণ আমিও জানতে চাই যে “কিভাবে এই পথে। পুরুষরা ধনী হয়”। যদি আপনি তাদের মধ্যে একজন হন যারা বিশ্বাস করে যে কঠিন পরিশ্রম এবং সততাই শুধুমাত্র বিত্ত আনে, তবে চিন্তাটি মুছে ফেলুন! ইহা সত্য নয়! ধনীরা, যখন তারা বিশাল পরিমাণের বিত্ত গড়েন, তা কখনও কঠিন পরিশ্রমের ফলাফল নয়! ধনীরা। ধনী হয়, যদি তারা নির্দিষ্ট চাহিদার প্রতি সাড়া দেয়, তাদের ভিত্তি নির্দিষ্ট সূত্রের। ব্যবহার বিধির ওপর এবং সুযােগ বা ভাগ্যের দ্বারা নয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে, একটি ধারণা হচ্ছে একটি চিন্তার তরঙ্গ যা কাজে রূপান্তরিত হয় একটি কল্পনার উপস্থিতি দ্বারা। এক কদম সামনে যান, চয়ন করুন আপনি কি চান, তৈরী করুন আপনার পরিকল্পনা, পরিকল্পনাটি অনুযায়ী কাজ আরম্ভ করুন এবং অনুসরণ করুন অধ্যবসায়ের সাথে । অধ্যবসায়ী হােন আপনি যত ধীরেই আরম্ভ করুন না কেন, ব্যাপার না, প্রথমে। আপনাকে অবশ্যই চলতে হবে। অধ্যবসায়ের সাথে সাফল্য আসবেই ।
আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা অলিভার নেপোলিয়ন হিল আত্মোন্নয়নধর্মী রচনা লেখকদের মাঝে প্রথমদিককার একজন। ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সফলতা লাভের বিভিন্ন দিক লেখনীতে তুলে এনে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল আত্মোন্নয়নমূলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হিলের। নেপোলিয়ন হিলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট ভার্জিনিয়ায় ২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ সালে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ল'স্কুলের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। এর আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে, সেই ১৩ বছর বয়স থেকে। ১৯০৮ সালে এন্ড্রু কার্নেগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হিলের জীবনে আসে বিশাল পালাবদল। তখনকার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি কার্নেগী তাকে পরামর্শ দেন ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে ও তাদের সাফল্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে। এরপর তিনি বিশ্ববিখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এই তালিকায় আছেন হেনরি ফোর্ড, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলসহ আরো অনেকে। এমন ৪৫টি সাক্ষাৎকারের লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম রচনা 'দ্য ল অব সাকসেস'। এই বইয়ে তিনি সাফল্যের সূত্রকে ব্যখ্যা করেছেন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, পুঁজিবাদের সমন্বয়ে মূর্ত দর্শন দিয়ে। নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ সাফল্যগাঁথার চেয়ে সাফল্যের পেছনের সূত্র সহজীকরণের পাথেয় হিসেবে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিখ্যাত এই লেখকের চরিত্রের কিছু রহস্যময় বৈশিষ্ট্য মানুষকে ভাবিয়েছেও বটে। তিনি দাবি করতেন, আত্মাদের সাথে তাঁর যোগাযোগ আছে, তাঁকে দেয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাফল্যের মন্ত্র। হিল এই বিষয়টি তাঁর ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বই 'গ্রো রিচ(!) উইথ পিস অব মাইন্ড' এ খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর জীবনের অজানা কিছু অধ্যায় উঠে এসেছে গবেষকদের চোখে। তবে নেপোলিয়ন হিল এর বই সমগ্র বিতর্কিত ব্যক্তিজীবনের প্রভাবেও জনপ্রিয়তা হারায়নি। তাঁর রচিত 'থিংক এন্ড গ্রো রিচ' সর্বকালের সেরা আত্মোন্নয়নমূলক দশটি বই এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ হলো 'অ্যাটিটিউড মেন্টাল পজিটিভা', 'দ্য মাস্টার কি টু রিচেস', 'সাকসেস হ্যাবিটস' ইত্যাদি। বিতর্কিত চরিত্রের এই লেখক ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর বেশ রহস্যজনকভাবে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি পারকিনসন্স সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন।