বিষগিঁঠা (হার্ডকভার)

বন্যার জল গ্রামটাকে ছুঁয়ে, হাওয়া শূন্য মাঠ-প্রান্তর পার হয়ে, নদী বেয়ে সাগর পেরিয়ে কোথায় সরে গেছে তার ঠিক-ঠিকানা নেই। জনবহুল এ পাড়ার বাসিন্দাদের পুরনো ঘরগুলো ঠিকই গায়ে গায়ে ঘেঁষে ঘেঁষে আজও জমাট বেঁধে আছে। আজও জমাট বেঁধে থাকে ওদের জ্বালাময়ী আশা, ঘরের কান্না, ক্ষুধা-তৃষ্ণা, মুখ থোবড়ানো নিরাশা, রোগ-শোক, কাম- পিপাসা, নিজেদের মধ্যে রেষারেষি, টিকে থাকার চেষ্টা।
বন্যার জল ওদের সবকিছু ধুয়ে নিয়ে গেলেও ওদের জ্বালাময়ী কষ্টটাকে ধুয়ে নিয়ে যায় না কোনোদিনই। তাই ওরা আজও এমন। এ পাড়ার লোকই অনিল মালো। তার কালো কুচকুচে শরীরের লোমবিহীন বুকের হাড়গুলো জেগে থাকে শুকনো গাছের শেকড়ের মতো। রাত জাগা শিকারির মতো ধারালো চোখে ক্যাতর থাকাটা যেন ওর একটা স্বভাব। দাঁতগুলো কয়লার চেয়েও ময়লা হবে। দুপুরের কড়া রোদে খালি গায়ে ছেঁড়া লুঙ্গি কাছা দিয়ে কুমার নদীর পাড়ে এসে দাঁড়াল অনিল।