নতুন শতাব্দীকে বলা হচ্ছে প্রযুক্তির শতাব্দী। ইনফরমেশন টেকনোলজি এবং মিডিয়ার সুবাদে নতুন সাজে পুরাতন এজেন্ডা বাস্তবায়নে ধর্মীয় ফিরকাবাজি উসকে দিচ্ছে কিছু লোক। এই কিছুদিন আগেও মুসলিমরা যখন মসজিদে নামাজে দাঁড়িয়েছেন, তখন ভুলে গেছেন বাইরের সব বিভেদ। কিন্তু আজ শুধু দুঃখ নয়; শঙ্কার সঙ্গে লক্ষ করছি, তথাকথিত সহিহ(!) আন্দোলনের কবলে পড়ে মুসলিমদের ঐক্যের প্রতীক নামাজসহ অন্যান্য ইবাদতও অনৈক্যের মহা-সম্মিলন হয়ে দাঁড়িয়েছে! তাদের সহিহ(!) আন্দোলনের শিকার সরলপ্রাণ তরুণসমাজ। লা-মাজহাবি সহিহ(!) আন্দোলনের কারণে আজ নামাজের কাতারে কাতারে ঝগড়া, ইমাম-মুসল্লিদের মধ্যে তর্ক, স্বামী-স্ত্রীতে বিবাদ এবং ইসলামি আন্দোলনের কর্মীদের মধ্যেও সংঘাত! সহিহওয়ালাদের এই অপপ্রচারের কবল থেকে মুসলিমদের ইমান-আকিদা রক্ষার জন্য আলিমরাসহ দলমত নির্বিশেষে সবাই এখন সচেতন হচ্ছেন। আলিমদের পক্ষ থেকে যথাযথ জবাবও দেওয়া হচ্ছে; কিন্তু ইসলামি বিধিবিধান-সংক্রান্ত জটিল বিষয়গুলো সহজ-সরল উপস্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ মুসলমানের উপযোগী করে রেফারেন্সসহ একটি প্রামাণ্য গ্রন্থের অভাব ছিল। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থের মাধ্যমে এই ঘাটতি পূরণ হবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এই প্রজন্মের শক্তিমান লেখক রশীদ জামীল। যাঁকে তরুণ লেখকদের আইডলও বলা যায়। তরুণদের অনেকেই যাঁর লেখার স্টাইল ফলো করেন। রশীদ জামীল লেখালিখি করছেন ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে। দেশবিদেশের পত্রিকা-জার্নালে লিখেছেন কয়েকশত প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও কলাম। ঘুরেছেন মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকাসহ অনেক দেশ। কঠিন কথা সহজ ভাষায় লিখতে পারা কঠিন একটা কাজ। কিন্তু এই কঠিন কাজটা রশীদ জামীল সহজভাবে করে থাকেন। হুমুল্লাজিনা, ইলাইহিল ওয়াসিলা, জ্ঞান বিজ্ঞান অজ্ঞান, আহাফি, মমাতি, কাচের দেয়াল, বিরাট ওয়াজ মাহফিল, পাগলের মাথা খারাপ, সেদিনও বসন্ত ছিল, মুমিনের নামাজ, সুখের মতো কান্না, একটি স্বপ্নভেজা সন্ধ্যাসহ পঞ্চাশের কাছাকাছি পাঠকপ্রিয় গ্রন্থের রচয়িতা এই লেখক ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ তরুণ কলামিস্ট হিসেবে জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন। দীর্ঘ দুই দশক ধরে কাছে থেকে দেখা এই লেখকের একটা বৈশিষ্ট্য হলো, তিনি যা ভাবেন এবং বিশ্বাস করেন, তা-ই অকপটে লিখে ফেলেন। এতে কেউ খুশি হয় কেউ করে গালিগালাজ। তখন তিনি তাঁর অন্যতম আরেকটা বৈশিষ্ট্যকে কাজে লাগান। সেটি হলো তিরষ্কার ও তোষামোদ দুটোকেই পাশ কাটিয়ে চলা।