বর্তমান দিনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের চর্চার প্রয়োজনীয়তা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞানের একটি অংশ। প্লেটো, অ্যারিস্টটলের হাত ধরেই এই চর্চার সূত্রপাত ঘটেছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভিন্ন সামাজিক ক্ষেত্র যেমন প্রশাসন, সরকার, গণতন্ত্র ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চর্চা করে। মানুষ যেহেতু সামাজিক জীব ও তার মধ্যে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক চিন্তার বিকাশ, তাই প্রতি মুহূর্তেই সমাজের কোনও না কোনও ধারায় অংশীদার হতে হয় তাকে। তাই জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রবিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলা যায় কিনা এই নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক বিদ্যমান, যদিও এর মাধ্যমে সুসংবদ্ধ জ্ঞান অর্জন, সাধারণ সূত্রের প্রতিষ্ঠা সম্ভব। লর্ড ব্রাইসের মতে মানুষের রাজনৈতিক আচরণ জটিল একটি চর্চার বিষয়। কিন্তু তার মধ্যে লক্ষ্যণীয় সামঞ্জস্য বর্তমান। গেটেল এ বিষয়ে বলেছেন যে, বিজ্ঞান বলতে যদি কোনও বিষয় সম্পর্কে শৃঙ্খলিত পর্যবেক্ষণ, অভিজ্ঞতা ও পঠন ইত্যাদি দ্বারা লব্ধ জ্ঞান ভাণ্ডারকে বোঝায়, তাহলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অবশ্যই বিজ্ঞান। পুরোনোপন্থী বদ্ধমূল ধারণার আলোকে নিজেকে সীমাবদ্ধ না রেখে যুক্তির আলোকে সবকিছুকে বিচার করে বলেই রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি সমসাময়িক চর্চার বিষয় হিসাবে পরিগণিত। অন্যান্য বিবিধ বিষয়ের পাশাপাশি রাষ্ট্রবিজ্ঞানও তার বিষয় চর্চার পরিধি ও প্রায়োগিক মূল্যের নিরিখে প্রথম শ্রেণিতে স্থান করে নিয়েছে। রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁরা অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পরীক্ষা-নিরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য পেশ করেন। এদিক থেকে সামাজিক বিজ্ঞানের একটি শাখা হিসাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞান অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য বিষয় ।