“গুলেনবারি সিনড্রোম ও অন্যান্য গল্প " বইটি সর্ম্পকে কিছু তথ্যঃ হ্যাঁ তিনি গ্রামে গিয়েছিলেন, জেনেছিলেন ওটা আত্মহত্যা নয় ওটা হত্যা। বন্ধুর অসহায় স্ত্রী-পুত্র-কন্যার কথা বারবার মনে পড়ে। একটা বিষন্ন নিয়ে তিনি ঢাকাতে ফিরে আসেন। তারপরের ঘটনাটা অনেকটা চলচ্চিত্রের মতো। রাতে ঘুম আসে না তার। সামান্য জ্বর হয়। কোনো এক রাতে শরীর ঘামতে থাকে। হাত পায়ের আঙুলগুলো ক্রমশ অবশ হয়ে যায়। ডাক্তারের রিপোর্টে জানা গেল আব্দুর রহমান গুলেনবারি সিনড্রোম নামে এক কঠিন ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে যখন তাকে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র দেওয়া হলো তখন তাকে চোখের সামনে একটা কালো পর্দা নেমে আসতে থাকে। সেই পর্দায় তিনি দেখতে পান- বন্দু ঝুলন্ত লাশ, মৃত বন্ধুর ধর্ষিতা মেয়েটার চোখে মুখে মোহনার সমস্ত বেদনা, একটা নদী শুকিয়ে যাচ্ছে, রুই, কাতলা, মৃগেল, কালিবাউশ, পুটি, টেংরা, ফলুই আর লাফ দিয়ে ওঠেনা, নদীর কালো পানিতে কাঁপন ধরে না। আলো-অন্ধকারের ভেতর একজন স্ত্রী ডুকরে কেঁদে ওঠে, কিছু বলতে চায়। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের সবার শঙ্কিত চাহনি তখন কম্পিউটার মনিটরের দিকে। এসব নিয়েই ওলেনবারি সিনড্রোম ও অন্যান্য গল্প।
জন্ম ৬ জানুয়ারি ১৯৫৪ সাল, মেহেরপুরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তারপর গবেষণাকর্মে আত্মনিয়ােগ করেন। ১৯৭৯ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে শিক্ষকতায় যােগদান করেন ।। দীর্ঘ ১০ বছর চট্টগ্রাম কলেজে ইতিহাসের প্রভাষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে যথাক্রমে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ও যশাের সরকারি এম এম কলেজে অধ্যাপনা করেন। ২০০৫ সালে প্রফেসর পদে পদোন্নতি পান। স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পর ঢাকায় বসবাস। শুরু করেন লেখালেখির সঙ্গে ঘরসংসার । প্রচুর লিখে চলেছেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলাে: গুলেনবারি সিনড্রোম ও অন্যান্য গল্প; অষ্টনাগ ষােলচিতি; পােড়ামাটির জিলাপি ও অন্যান্য গল্প; পক্ষি ও সারমেয় সমাচার। (উপন্যাস); পুষ্পরাজ সাহা লেন (উপন্যাস, শিখা। প্রকাশনী); আমাদের নতিপােতা গ্রামের ইতিহাস। (উপন্যাস); নেফারতিতি (উপন্যাস); কথা। উপকথা (উপন্যাস); রৌদ্র ও ত্রাতাগণ (মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস); বন্দিভুতের ফন্দি (কিশােরদের গল্প) ও। ছােটকু মােটকু (কিশােরদের গল্প)। হাবিব আনিসুর রহমান তার লেখায় একই সঙ্গে শােষণে শাসনে পর্যদস্ত গ্রামের প্রান্তিক জনগােষ্ঠীর। 'পােড়খাওয়া জীবন এবং পুঁজির ঔরসজাত কদর্যে। ভরা অসুস্থ উন্মাদ নাগরিক জীবনের ছবি এঁকে যান স্বেচ্ছায়, নিজ দায়িত্নে; তৈরি করেন অন্য এক। ভুবন যেখানে স্পষ্ট হয়ে ওঠে মানুষের জীবনের। প্রকৃত চিত্র। লেখালেখির জন্যে তিনি ২০১১ সালে। ‘জীবননগর সাহিত্য পরিষদ সম্মাননা' এবং ২০১৫। সালে ‘কাঙাল হরিনাথ মজুমদার’ পদকে ভূষিত। হন। তিনি ভালােবাসেন বই পড়তে, লিখতে আর। 'সেতার শুনতে। সময় পেলে মুভি দেখেন।