দেশ, কাল, মাটি ও মানুষ-এ সমস্তই হায়াৎ সাইফের বৌদ্ধিক ও আত্মিক অভিনিবেশের বিষয়। ঘূর্ণি-উত্তাল ষাটের দশকের অন্যতম প্রোজ্জল ও বিশিষ্ট কণ্ঠস্বর তিনি। বাংলা কবিতার ধারাবাহিকতায় ষাটের দশক আমাদের সামাজিক- রাজনৈতিক অস্তিত্বের জন্যে সংগ্রামী ও প্রদীপ্ত আত্মিক সমুথানের কাল। পঞ্চাশোত্তর কালের সমাগত নতুন প্রজম্মের এই কবিদের রচনায় সংগত কারণেই লক্ষ্যযোগ্য হয়ে হয়ে ফুটে উঠেছিল দ্রোহ, বিতারাগ, আত্মনির্যাতন আত্মজাগতির কিছু অভিনব লক্ষণ। এঁরা কবিতাকে সমকালীন রুচির তাগিদে যেমন বিশৃঙ্খল করে দিতে উদ্যত হয়েছিলেন তেমনি বাংলা কবিতার ধ্রুপদী ধারাটিকেও নিষ্ঠার সঙ্গে বহন করেছিলেন অন্তরে। হায়াৎ সাইফ সেই দ্রুপদ-অম্বিষ্ট প্রজ্ঞাবান ধারারই এক বিরল ধারক। নিভৃতচারী, পরিশীলিত, শাব্দিক নান্দনিকতায় দায়বন্ধ কবি ছেষট্রি বৎসরে পদার্পণ করলেন। চার দশকেরও অধিক সময়ের অনবরত পরিমার্জনা ও সংগোপন চর্চায় তিনি আবহমান বাংলা কবিতার ব্যাপ্ত পরিম-লে ইতোমধ্যে নির্মাণ করে নিয়েছেন তাঁর নিজস্ব একটি ঘরানা যার ভিত্তি হাজার বছরের বাংলা কবিতার অনিবারণীয় প্রাণশক্তি এবং আমাদের আত্মপরিচয়ের দুর্মর পলিমাটি। এই গ্রন্থের সাতান্নটি কবিতায় হায়াৎ সাইফ এই পাললিক জীবনের ভেতর থেকে ছেঁকে এনেছেন আমাদের বর্তমান অস্তিত্বর অনিবার্য ব্যাখ্যা সা¤প্রতিক উচ্চারণে তাঁর নিজস্ব ভাষায় আর অনবদ্য চিত্রকল্পে ও স্বভাবসুলভ পরিচর্যায়। কবিতার সাধারণ ও নিবিষ্ট পাঠকের এই কবিতাগুলোসমূহ আনন্দিত করবে বলে আমাদের একান্ত বিশ্বাস।
জন্ম ১৬ ডিসেম্বর ১৯৪২, ঢাকা। দেশ, কাল, মাটি ও মানুষ - এই সমস্তই হায়াৎ সাইফের বৌদ্ধিক, আত্মিক ও নান্দনিক অভিনিবেশের বিষয়। ঘূর্ণি-উত্তাল ষাটের দশকের রুচিবান ধ্রুপদ-অন্বিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক । ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র । রবীন্দ্রচর্চা তাঁর মনােযােগের একটি প্রধান বিষয়।