"বিশ্বের সেরা অ্যাডভেঞ্চার" বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ অ্যাডভেঞ্চার কথাটা দিয়ে আমরা সাধারণভাবে দুঃসাহসী অভিযানকেই বুঝিয়ে থাকি। এই অ্যাডভেঞ্চারের নেশা বহু মানুষের রক্তে মিশে আছে। এ এক দুর্দমনীয় নেশা। এই নেশা একবার যার মাথায় ঢুকেছে সে প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে নির্দ্বিধায় ছুটে যায় মরণপানেও। অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনীগুলাে সে কারণেই আকর্ষণীয় ও রােমহর্ষক। অ্যাডভেঞ্চারের আকর্ষণ যেহেতু চিরন্তন, তাই অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে এ পর্যন্ত বহু গল্পউপন্যাস রচিত হয়েছে। এসব সাহিত্যকর্ম মানুষকে আকর্ষণ করে এসেছে চিরটাকাল সুপ্রাচীনকাল থেকে শুরু করে বর্তমানকাল পর্যন্ত কোনাে না কোনােভাবে বিশ্বসাহিত্যের বিরাট অংশ জুড়ে আছে অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনী। হােমারের ইলিয়ড-অডেসি, গ্রিক পুরাণ, ভারতীয় পুরাণ সর্বত্রই আছে অভিযানের বর্ণনা। হােক না রূপকথা, কিন্তু আরব্য রজনীর কাহিনীও তাে অ্যাডভেঞ্চারেই ঠাসা। এ বইটাকে তাই সাজিয়েছি অ্যাডভেঞ্চার দিয়েই। তবে এ বইয়ের একটা গল্পও বানানাে নয়। এতে যতগুলাে অ্যাডভেঞ্চারের কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে সবগুলােই পুরােপুরি সত্য। সুদূর অতীত থেকে শুরু করে একবারে একবিংশ শতক পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসের বাছাই করা সেরা দুঃসাহসী অভিযানগুলােকে দু’মলাটের ভেতর বন্দি করা হয়েছে। এতে যেসব কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে তা পড়ে পাঠকের যেমন রােমাঞ্চকর অনুভূতি হবে, তেমনি সম্ভব হবে অতীতের রাজ্যে হারিয়ে যাওয়াও। আসলে একই সাথে গল্পের মজা আর ইতিহাসের স্বাদ পাঠককে দেয়ার জন্যেই বইটা লেখা। বইয়ের পরিসর খুব একটা বাড়তে দেইনি, যাতে আনন্দের রেশ কাটার আগেই বইটা শেষ হয়।
Khandokar Mahmudul Hasan খন্দকার মাহমুদুল হাসান। বাংলাদেশের প্রখ্যাত গবেষক ও শিশু-সাহিত্যিক। জন্ম ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দের ২৫ আগস্ট। তাঁর শতাধিক গ্ৰন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ইতিহাস, প্রত্নতত্ত্ব, চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও সাময়িকপত্র বিষয়ক তাঁর মূল্যবান গবেষণাগ্রন্থসমূহ ব্যাপকভাবে প্ৰশংসিত। ছোটদের জন্যে তাঁর লেখা গোয়েন্দাকাহিনি, অ্যাডভেঞ্চার গল্প, রহস্যোপন্যাস, শিকার কাহিনি, ভয়- ভূতের গল্প, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি, জীবনী, ইতিহাস ও বিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থগুলো ঘরে ঘরে সমাদৃত। দুই বাংলার জনপ্রিয় এই সাহিত্যিক সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতি হিসেবে পেয়েছেন বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে শিশুসাহিত্যের জন্য শীর্ষস্থানীয় সম্মাননা অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার (১৪০৮ ও ১৪১১ বঙ্গাব্দ) ও এম নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার -২০১৪ । পশ্চিমবঙ্গ থেকে গল্পের জন্যে পেয়েছেন টুকলু পুরস্কার (যতীন্দ্রমোহন রায় স্মৃতি পুরস্কার ২০১৪)। এছাড়াও পেয়েছেন বাংলাদেশ সাহিত্য সংঘ সম্মাননা-২০০৮, স্বভাবকবি গোবিন্দচন্দ্ৰ দাস সম্মাননা, গাজীপুর-২০০৯), রকি সাহিত্য পুরস্কার-২০১০, গবেষক আবদুল হক চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, চট্টগ্রাম-২০১০; সম্মাননা-পেীর মেয়র ও প্যানেল মেয়র-২, বগুড়া-২০১২, সম্মাননা-এগারখান উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, যশোর-২০১৬ । তিনি বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি, ইতিহাস সমিতি ও ইতিহাস একাডেমির সদস্য।