রবীন্দ্রনাথ শরৎচন্দ্র প্রমুখ মহারথীরা যখন বাংলা সাহিত্যাকাশে বিরাজমান, তখন একদল তরুণ লেখনীধর প্রথাসিদ্ধ সাহিত্যরীতি বর্জন করে বাস্তব জীবনকে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বাংলা কথাসাহিত্যে চিত্রায়িত করার সিদ্ধান্ত নিলেন। তাঁদের মনে হচ্ছিল বিদেশি সাহিত্যে যখন বাস্তব জীবন নিয়ে গল্প-উপন্যাস রচিত হচ্ছে, তখন বাংলা সাহ্যিত্যই বা পিছিয়ে থাকবে কেন। তাঁদের আরও মনে হয়েছিল, বাংলা সাহিত্য বিশেষ করে তদানীন্তন বাংলা সাহিত্য যেন ক্রমশ নীতির নিগড়ে আবদ্ধ হয়ে আসছে। তাঁরা সেই নিগড় ভাঙতে এগিয়ে এলেন। ‘যে তরুণ যাত্রীদল বাহিরিল রুদ্ধদ্বার রাত্রি অবসানে’-সেই তরুণ যাত্রীদলের অন্যতম হলেন শৈলজানন্দ। শৈলজানন্দ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯০১ সালের ১৯শে মার্চ বীরভূমের রূপসীপুর গ্রামে। শৈশবেই মাতৃহীন হলে তাঁর দাদামশাই তাঁকে নিজের কাছে বর্ধমানে নিয়ে আসেন। এইখানেই তাঁর নজরুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয়। সে পরিচয় ক্রমে অগাধ বন্ধুত্বে পরিণত হল। শৈলজানন্দ দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। শৈলজানন্দ ও নজরুল বাড়ি থেকে পালিয়ে সেনাদলে নাম লেখাতে যান। শৈলজানন্দের দাদামশাই নামজাদা কয়লাখনির ব্যবসায়ী। তিনি কলকাঠি টেপার ফলে ডাক্তারি পরীক্ষায় শৈলজানন্দ বাতিল হন। ফিরে এসে পড়াশুনো শুরু করলেও কলেজের পড়া শেষ