হতশেপসুত জানে যে সে অনন্যা। অনন্যা শুধু রূপে নয়, গুণে বুদ্ধিবৃত্তিতে কোমলতায় এবং কঠোরতায়ও। সে এ বিষয়ে এত সচেতন যে এত অল্প বয়সে যা সে বুঝতে পারে সমবয়সিরা কেউ তা পারে না। এমনকি তার চেয়ে বয়সে বড়ো এবং পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিরাও বুঝতে ব্যর্থ হয়। অথচ তার শৈশবকাল এখনো অতিক্রান্ত হয়নি। কৈশোরে পদার্পণ করতে এখনো দু'এক বছর বাকি। আশ্চর্য তার স্মৃতিশক্তি। কিছুই সে ভুলে যায় না। প্রাসাদের নানা স্থানে অঙ্কিত ছোটো-বড়ো চিত্রের মতো সমস্ত ঘটনা তার মনের মধ্যে ছাপ ফেলে যায়। সবে যখন সে এক-পা এক-পা করে হাঁটতে গিয়ে পড়ে যেত, সেই সময় সে মায়ের সদ্য কেচে আসা শুকিয়ে রাখা স্তূপীকৃত পোশাকের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুখ গুঁজে দিত। সূর্যের উত্তাপে উত্তপ্ত সেই বহুমূল্যবান নরম মসৃণ পরিচ্ছদের এক মন-মাতানো সুগন্ধ তার দেহমনকে আবিষ্ট করে তুলত। তার গর্ভধারিণী সম্রাজ্ঞী অহমেস এতে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হতেন। কারণ তিনি বরাবর নিজেকে সুসজ্জিত এবং আকর্ষণীয় করে রাখতে ভালোবাসেন। তাঁর সাজঘর নানারকম সুগন্ধি আরক, অঙ্গের শোভাবর্ধনকারী নানা উপাদান, চক্ষুদ্বয়কে আরও সুন্দর করে তোলার বিবিধ রকমের কজ্জল প্রভৃতি দ্বারা সজ্জিত। সেই সব আতরদানি, কাজলদানি, সুগন্ধি তেলের আধার, কোনোটি হস্তীদন্ত নির্মিত, কোনোটি শ্বেতপাথর, কোনোটি কাষ্ঠ, কোনোটি বা স্বর্ণ অথবা রৌপ্য দ্বারা তৈরি।